সীমান্তে ফের গোলার শব্দ, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পুনরুদ্ধারে আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ চলছে। হেলিকপ্টার থেকে গোলাবারুদ ছোড়া হচ্ছে। তিনদিন ধরে থেমে থেমে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের এপারে ভেসে আসছে গোলার বিকট শব্দ। ফলে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের আশঙ্কায় সর্তক অবস্থানে রয়েছেন বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা।
সোমবার (৪ মার্চ) উখিয়ার থাইংখালি, টেকনাফের নাইটং পাড়া-হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্তের এপারের বাসিন্দারা গোলার শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এর আগে গত শনিবার (২ মার্চ) ও রোববার (৩ মার্চ) রাতভর গোলগুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানা গেছে।
সোমবার সকালে মর্টারশেল ও হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গোলার শব্দ উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের এপারে ভেসে আসে। এ ঘটনায় সীমান্তের এপারের মানুষ চিংড়ি ও কাঁকড়া ঘেরসহ ধানচাষে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, গত কয়েকদিনে হ্নীলা সীমান্তের এপারে দফায় দফায় বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি রাখাইনে আরাকান আর্মির হাতে দখলকৃত গ্রাম পুনরুদ্ধার, মংডুর রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপ জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।
তবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সর্তক পাহারায় রয়েছেন।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, রাখাইনের সংঘাতের কারণে সীমান্তের এপারে চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘের, ধানচাষে যেতে না পেরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অনেক মানুষ।
এদিকে একটানা তিন দিন ধরে থেমে থেমে হোয়াইক্যং সীমান্তের এপারে বিকট শব্দ ভেসে আসছে। সীমান্তের ওপারে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উখিয়ার থাইংখালির বাসিন্দারা জানান, শনি-রোববার রাত থেকে থাইংখালি রহমতের বিল সীমান্তের ওপারের বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। সোমবার সকাল ১০টার পরে হঠাৎ পর পর বিকট আওয়াজ এপারে ভেসে আসলে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় যেসব চাষিরা সীমান্তবর্তী ক্ষেতে কাজ করছিলেন তারাও ভয়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসরতদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন