সেই এসিল্যান্ডকে স্ট্যান্ড রিলিজ
জমি খারিজসংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়ায় ৫ সাংবাদিককে নিজ কার্যালয়ে আটকে রেখে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনায় লালমনিরহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকারকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ঘটনার পর বৃহস্পতিবারই তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তাকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বদলি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত একটি আদেশ ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসেছে।
এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে ৫ সাংবাদিককে আটকে রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার। আটকে রাখার প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কার্যালয়ের গেটের তালা খুলে তাদের মুক্ত করেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের অভিযোগ, ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষজন নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন মর্মে তথ্য সংগ্রহে যান মাইটিভির সাংবাদিক মাহফুজ সাজু। এ সময় ভূমি অফিসের ক্রেডিট চেকিং কাম সায়রাত সহকারি রাশিদুল ইসলাম ওরফে রাসেল সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ভূমি অফিসের সার্টিফিকেট সরকারি মেহেদী হাসান ও অফিস সহায়ক ইমদাদুল হক ওই সাংবাদিককে হেনস্তা করেন। পরে খবর পেয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা ভূমি অফিসে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান অফিসে উপস্থিত হয়ে অফিসের কলাপসেবল গেট তালা মেরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উপস্থিত সাংবাদিকদের জেলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেন।
পরে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহকে বিষয়টি জানানোর পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএম মমিন ঘটনাস্থলে আসলে সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ অবস্থায় পান। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে জেলা শহরের মিশন মোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ এসে এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবরোধ তুলে নেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, সাংবাদিকদের আটকে রেখে জেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে অপরাধ তিনি করেছেন তার শাস্তি বদলি হতে পারে না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মতো আইনের অপপ্রয়োগ করতে কেউ সাহস না পায়।
সিনিয়র সাংবাদিক মোফাখখারুল ইসলাম মজনু বলেন, বদলি একটি নিয়মিত প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। আমরা এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। এ দাবি পূরণ না হলে আমরা আবার আন্দোলনে যাবো।
মন্তব্য করুন