শেষবারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু
ভাষাসৈনিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাঁটি বাজার ঈদগাহ ময়দানে।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স তার গ্রামে এসে পৌঁছায়। পরে সকাল ৯টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা।
জানাজার পূর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ কৃতী সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়।
শেষ বারের মতো গুণী এ মানুষটিকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর ছোট মেয়ে ডানা নাজলী, জামাতা সাহিনুর রহমানসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অনেকেই।
এ সময় স্মৃতিচারণকালে সবার কথায় উঠে আসে অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর দেশপ্রেম, গ্রামের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, তার কর্মময় জীবনের সততার কথা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ নেওয়া হয় রাজশাহীতে। সেখানে রাজশাহী কলেজে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা শেষে ঢাকায় নেওয়ার পর শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু ১৯৩১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৩ বছর।
মন্তব্য করুন