গৃহবধূকে নির্যাতনের পর হত্যা, স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ আমেনা খাতুনকে (২১) নির্যাতনে হত্যার পর লাশ টয়লেটের ভেতর ফেলে স্বামীসহ শ্বাশুড়ি ও দেবর পালিয়েছে।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনয়নের চকপাড়া (সলিংমোড়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত গৃহবধূ আমেনা খাতুন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কুটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। স্বামী আনোয়ার হোসেন মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার মঞ্জুর আলীর ছেলে। সে পেশায় রাজমিস্ত্রি। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেন।
গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন (২৫), শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫০), দেবর দেলোয়ার (২২) এবং মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার (৩৮) ঘটনার পর পলাতক রয়েছেন।
নিহতের মা মনোয়ারা বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীসহ তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন মেয়েকে লোকজন নির্যাতন করত। তাদের অব্যাহত নির্যাতনে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার একাধিকবার সালিস বৈঠক করেও কোন সুরাহা করতে পারেনি। শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় মেয়ে মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার ফোন করে জানায় আমেনা মারা গেছে। খবর পেয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে দেখি বাড়ীতে কেই নাই। ঘরের ভেতরে টয়লেটে মেয়ের লাশ পড়ে আছে। আশপাশের লোকজনের কাছে শুনেছি শুক্রবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে স্বামীসহ তার শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর এবং মামি শাশুড়ি আমার মেয়েকে অনেক নির্যাতন করে বাড়ীর পাশে রাস্তায় ফেলে রাখে। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় স্থানীয় আদম আলী গ্রহবধূকে রাস্তা থেকে তুলে এনে বাড়িতে দিয়ে গেলে আবার মারধর করে হত্যা করে লাশ টয়লেটে রেখে তারা পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা তাকে সবসময় নির্যাতন করত। তারা আমার মেয়েকে খুন করে আমার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে এবং দেড় বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে।
শ্রীপুরের মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা বলেন, বসতবাড়ির একটি ঘরের টয়লেটের ভেতর থেকে গৃহবধূ আমেনার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল করে লাশের থুঁতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় রহস্য ও সন্দেহ রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য করুন