জিম্মি জাহাজের খাবার শেষ হলেও যে কারণে চিন্তার কিছু নেই
সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহ নামের বাংলাদেশি জাহাজে খাবার কমে আসছে। তবে খাবার কমলেও নাবিকদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ তীর থেকে দস্যুরা জাহাজে খাবার সরবরাহ করছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, জিম্মি নাবিকেরা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের খাবার কমলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ তীর থেকে দস্যুরা জাহাজে খাবার নিয়ে আসছে।
নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দস্যুরা নিজেদের স্বার্থেই খাবার নিয়ে আসে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজেও তেহারিজাতীয় খাবার নিয়ে আসার খবর পেয়েছি।
মালিকপক্ষ জানিয়েছে, জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতা করে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমাদের তৎপরতা চলছে।’
নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা জানান, সমঝোতা কখন হবে তা দস্যুদের ওপর নির্ভর করে। কারণ তারা তাদের দাবিতে অনড় থাকলে সমঝোতায় পৌঁছাতে দেরি হতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত সমঝোতা হতেও পারে।
জলদস্যুরা জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য ২৫ দিনের খাবার ছিল। এরই মধ্যে জিম্মিদশার ১৬ দিন পার হয়েছে। এ সময় নাবিকদের পাশাপাশি দস্যুরাও জাহাজের খাবার খাওয়া শুরু করে। ফলে দ্রুতই শেষ হচ্ছে খাবার।
এর আগে ২০১০ সালে জিম্মি করা এমভি জাহান মণি জাহাজেও খাবার ফুরিয়ে আসার পর দস্যুরা সরবরাহ করেছিল। ওই ঘটনায় প্রায় ১০০ দিনের মাথায় নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হয়। সেই জাহাজে থাকা নাবিক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানিয়েছেন, জিম্মি করার পর একপর্যায়ে জাহাজের ফ্রিজ বন্ধ থাকায় হিমায়িত খাবার নষ্ট হয়ে যায়। জিম্মিদশার শেষ দিকে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পর তীর থেকেই খাবার সরবরাহ করত দস্যুরা।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটিকে সবশেষ সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখা হয়েছে। জাহাজসহ নাবিকদের উদ্ধারে নানানভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠানটি।
মন্তব্য করুন