পর্যটকের পদচারণায় মুখর কুয়াকাটা সৈকত
ঈদের দ্বিতীয় দিনে হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত। আগত পর্যটকরা সৈকতের বুকে আছড়ে পড়া ছোট-বড় ঢেউয়ে সাঁতার কেটে আনন্দে মেতেছেন। অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড়ে মেতেছেন। অনেকে আবার ঘোড়া চড়ে, ওটারবাইক কিংবা মোটরবাইকে চড়ে সৈকতের বিভিন্ন পর্যটনস্পট ঘুরে দেখছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
আগত পর্যটকদের ভিড়ে বিক্রি বেড়েছে সকল পর্যটন স্পটগুলোতে। বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতের জিরো পয়েন্ট, শুঁটকি পল্লী, গঙ্গামতির সৈকত, রাখাইন মহিলা মার্কেট, রাখাইন পল্লী, জাতীয় উদ্যান, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন, সৈকতের ঝাউবাগানসহ পর্যটন স্পটগুলো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে।
ঘুরতে আসা পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় ঘুরতে আসলাম। সকাল থেকে পুরো সৈকত মুখর। অনেক লোক এসেছে, বেশ ভালো লাগছে। তবে প্রচন্ড গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
আবাসিক হোটেল সি ভিউ এর ম্যানেজার সোলায়মান ফরাজী বলেন, আজকে পর্যটকের সংখ্যা অনেক। শনিবার থেকে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এবারের ঈদের ছুটিতে আমাদের শতভাগ রুম বুকিং হয়েছে। আশা করছি, সামনের পুরো সপ্তাহজুড়ে ভালো পর্যটক পাবো।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, ঈদের ছুটি উপলক্ষে আজকে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক এসেছেন। প্রচন্ড গরমেও পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর গোটা সৈকত।
ছাতাবেঞ্চ ব্যবসায়ী নাসির খলিফা বলেন, আজকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শনিবার পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হাসান মারুফ বলেন, আজকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। আমরা বুকিং করে না এসে বিপদে পরে গেছি। হোটেলে রুম পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণত সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, প্রায় হোটেলের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। এখনও পর্যটকরা ফোনে রুম বুকিং দিচ্ছেন।
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি প্রত্যেকটি পর্যটন স্পটে সাদাপোশাকে পুলিশ সার্বক্ষণিক ডিউটিতে আছে। এখানে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আসা পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পর্যটকদের সেবায় পৌরসভা প্রস্তুত আছে। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটক বেড়েছে। ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা মহাসড়ক ফোর লেন বাস্তবায়িত হলে আরও পর্যটক বাড়বে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আজকে কুয়াকাটা পর্যটকে মুখর। কাল-পরশু কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল নামবে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলাপাড়া থানা, মহিপুর থানা, কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ, ফায়ারসার্ভিস, মেডিকেল টিম প্রস্তুত আছে।
মন্তব্য করুন