মনোনয়নপত্র নিতে প্রার্থীর বাড়িতে লোক পাঠালেন রিটার্নিং কর্মকর্তা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমা আখতার লাকীর বাড়িতে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার জন্য নোটিশ নিয়ে লোক পাঠিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল করিম। তার মনোনয়ন পত্র জমা হলে চেয়ারম্যান পদে আরও একজন প্রার্থী বাড়ছে। উচ্চ আদালতের আদেশের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমা আখতার লাকী জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের আওয়ালগাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে এ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১ মে) দুপুরে ওই প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দুই জন ব্যক্তি তার মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী অনলাইনে প্রার্থীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে মনোনয়ন দাখিলের জন্য নোটিশ নিয়ে যান। কিন্তু প্রার্থী নোটিশ না নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেন। তবে তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিল করে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
ওই প্রার্থী সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নেন নাজমা আখতার লাকী। সেই মোতাবেক তিনি নির্বাচনী তপসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ১৫ এপ্রিল ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের অনলাইনে আবেদন করার সময় সার্ভারে জটিলতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে চেষ্টা করেও নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হন। এর পর গত ২২ এপ্রিল তিনি নির্বাচনে অংশ গ্রহনের উদ্দেশ্যে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ওই রিট আবেদন হাইকোর্ট আমলে নিয়ে গত ২৩ এপ্রিল শুনানি শেষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান এবং বিচারপতি কে.এম জাহিদ সারোয়ারের যৌথ বেঞ্চ জয়পুরহাট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আদেশপত্র প্রাপ্তির দুই দিনের মধ্যে ওই প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার আদেশ দেন। এ ছাড়া ওই প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা না নেওয়ার কথিত ব্যর্থতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিবালয়ের সচিব, জয়পুরহাট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে ওই আদেশে।
এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা রিটের আদেশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে জানান। নির্বাচন কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় নাজমা আখতার লাকীর মনোনয়নপত্র গ্রহন করেননি রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এরপর মঙ্গলবার নাজমা আখতার লাকী আবারও উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আজ দুপুরে রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল করিম নাজমা আখতার লাকীর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার জন্য নোটিশ নিয়ে তাঁর বাড়িতে লোক পাঠান।
নাজমা আখতার লাকী বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আমার মনোনয়ন পত্র জমা নেননি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে আবারও আদালতকে বিষয়টি জানালে আদালত পুনরায় আমার মনোনয়নপত্র জামা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবো। আমাকে নিয়ে জনগণের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।
রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল করিম বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে একটি নোটিশ দিয়ে লোক পাঠিয়েছি এবং ফোন করেছি। এখন পর্যন্ত সে আমাদের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসেননি।
তিনি আরও বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অনলাইন সার্ভার চালু থাকবে। এই সময়ের পর তিনি মনোনয়ন জমা দিতে আসলে নির্বাচন কমিশনে আবারও কথা বলতে হবে।
মন্তব্য করুন