‘আমারে মাটি দিব ছেলে, এহন আমারেই দিতে হইবো মাটি’
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ রিফাত নিহত হয়েছেন। মানিকগঞ্জে নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা আক্তার খানম। তার আহাজারিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তাকে কোনোভাবে সামাল দিতে পারছেন না প্রতিবেশী আত্মীয়রা।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) মানিকগঞ্জে শহরের পশ্চিম দাশড়ায় জাওয়াদ রিফাতের বাড়িতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
জাওয়াদ রিফাতের মা নিলুফা আক্তার কাঁদছেন আর বলছেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিন সকালে ফোন করে। কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত ফোন করেনি। কখন আসবে জাওয়াদের ফোন। আমি আছি অথচ আমার ছেলে নাই এটা কেমন কথা। আমারে মাটি দিব আমার ছেলে। আর এহন আমারে দিতে হইবো তাকে মাটি।’
জানা গেছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমানুল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা।
নিহত জাওয়াদের বড় মামা সুরুজ খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিল জাওয়াদ। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছে। ছোটবেলা থেকে জাওয়াদের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়ে পাইলটও হয়েছিল। কিন্তু সেটি ছিল মাত্র অল্প সময়ের জন্য। পরিবারের মাথায় বাজ নেমে পড়েছে জাওয়াদকে হারিয়ে।’ আগামীকাল শুক্রবার জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে বলে জানান তিনি।
জাওয়াদের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে (বাফা) যোগদান করে ২০১১ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন জাওয়াদ। তার ছয় বছরের এক কন্যাসন্তান ও এক বছর বয়সী এক ছেলেসন্তান রয়েছে। স্ত্রী রিফাত অন্তরাসহ চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় থাকেন তারা।
মন্তব্য করুন