• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পাবনা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৪ মে ২০২৪, ১২:২৯
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বাচ্চু। ছবি : আরটিভি

পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মকবুল হোসেন বাচ্চু (৪৮) ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার লাকীর (৪৫) বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত আঞ্চলিক কার্যালয় পাবনা। সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করে দুদক।

রোববার (১২ মে) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পাবনার উপ-সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রায়হান বকসী বাদী হয়ে এ মামলা দুটি দায়ের করেন।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার উপ-পরিচালক খায়রুল হক মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বাচ্চু (৪৮) চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ধুলাউড়ি গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে চাটমোহর পৌর সদরের ৬ নং ওয়ার্ডে বসবাস করেন তিনি। তার স্ত্রীর নাম কামরুন্নাহার লাকী (৪১)।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা মিলেছে। ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই মকবুল হোসেন বাচ্চুকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ দেয় দুদক। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর দুদকের পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন চেয়ারম্যান মকবুল।

যেখানে মকবুল হোসেন বাচ্চু তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৪২ হাজার ২৮৯ টাকা মূল্যের সম্পদ প্রদর্শন করেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ২ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৭৬ টাকা মূল্যের সম্পদ পায় দুদক। এতে দেখা যায়, মকবুল হোসেন তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ৪৮৭ টাকা মূল্যের সম্পদ গোপন করেছেন।

আর অনুসন্ধানে তার মোট সম্পদের নিট মূল্য পাওয়া যায় ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ২২৩ টাকা। তার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৪১ লাখ ৮৬ হাজার ৭১৮ টাকা। সে হিসেবে তিনি ১ কোটি ৫৩ লাখ ৯১ হাজার ৫০৫ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন।

অন্যদিকে, একই তারিখে মকবুল হোসেনের স্ত্রী কামরুন্নাহার লাকীকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়। তিনিও তার স্বামীর সঙ্গে একই তারিখে একই কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

তার সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, লাকী স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ৪৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী আনুসন্ধানকালে তার নামে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৪৮৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩ টাকা মূল্যের সম্পদ গোপন করেছেন।

আর অনুসন্ধানকালে দুদক লাকীর মোট সম্পদের নিট মূল্য পায় ১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৬ টাকা। এই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৬ টাকা। এখানে কামরুন্নাহার লাকী অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ৪৮০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন।

দুদক তার অনুসন্ধান পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করেছে, কামরুন্নাহার লাকী প্রকৃতপক্ষে একজন গৃহিণী। তার স্বামী মকবুল হোসেন বাচ্চু হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ২০০৬ সাল থেকে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছেন। কামরুন্নাহার লাকীর নিজস্ব কোনো আয় না থাকলেও তার স্বামী মকবুল হোসেন বাচ্চু ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে তার নামে আয়কর নথি খুলে বিভিন্ন আয় প্রদর্শন করেছেন এবং উক্ত আয় দ্বারা সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই মামলায় মকবুলকে দুই নাম্বার আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার উপ-পরিচালক খায়রুল হক বলেন, দুদক পাবনা কার্যালয়ে মামলা ২টি দায়ের হয়েছে। দুদকই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে তদন্ত করবে। তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দুদকের মামলায় স্থায়ী জামিন পেলেন লুৎফর রহমান বাদল
দুদকের মামলায় খালাস পেলেন মির্জা আব্বাস
সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন, নড়াইলের মেয়রের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ডিএই কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা