সন্দ্বীপে সুদের টাকার জন্য হাত-পা ভাঙলো ব্যবসায়ীর
সন্দ্বীপে সুদের টাকা পরিশোধ না করায় আশিষ বনিক (৪৭) এক ব্যবসায়ীকে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্বজিত সূত্রধর ও লিটন সূত্রধর নামে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। আহত আশিষ বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এই ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় একটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সারিকাইত ইউনিয়নের শিবের হাটের নিউ জয়া জুয়েলার্সের মালিক আশিষ বনিক ব্যবসায়ে বিনিয়োগের জন্য স্থানীয় সুদ ব্যবসায়ী বিশ্বজিত সূত্রধর ও তার ভাই লিটন সূত্রধরের কাছ থেকে মাসিক সুদের ভিত্তিতে দুই লাখ টাকা নেন। কিন্তু ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সময়মতো সুদসমেত টাকা পরিশোধ করতে পারেননি আশিষ। তাই বিশ্বজিত ও লিটন সূত্রধর সুদের টাকার উপর আবারো সুদ ধার্য করেন। এই অতিরিক্ত টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সুদের অতিরিক্ত টাকার জন্য বিশ্বজিৎ আগেও দুইবার আশিষকে মারধর করেছিলেন।
সবশেষ গত ১৫ মে আশিষ বনিক বাড়ি থেকে দোকানে যাওয়ার পথে মন্দিরে প্রণাম করতে গেলে বিশ্বজিৎ ও লিটন তার উপর হামলা করে। তারা দুজনে মিলে ম্যাগলাইট (লোহার তৈরি বিদেশি লাইট) ও হাতুড়ি দিয়ে আশিষের কাঁধ, কব্জি, কনুই, হাঁটু, গোড়ালি ও পায়ের পাতা লক্ষ্য করে বেধড়ক মারধর করে। এতে তার ডান কাঁধ, ডান হাতের লম্বা হাড় ও ডান পায়ের গোড়ালির বল ভেঙে যায়। খবর পেয়ে বাড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আশিষকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে বিশ্বজিত ও লিটন তাদের উপরও চড়াও হন।
পরে আশিষের স্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে তার স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে বিশ্বজিৎ তাকেও লাঞ্চিত করে আটকে রাখে। প্রায় দুই ঘন্টা পর জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করা হলে সন্দ্বীপ থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক চয়ন দাস গুপ্ত গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য গাছুয়া সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
আশিষ বনিকের স্ত্রী শিমু বনিক বলেন, আমার স্বামীকে মেরে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমি তাকে মেডিকেলে নিতে বিশ্বজিতের পায়ে পর্যন্ত ধরেছি। কিন্তু সে আমার স্বামীকে ছাড়েনি, উল্টো আমাকেও মারধর করেছে। নগদ টাকা ও স্বর্ণসহ প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার জিনিসপত্র ও দোকানের চাবি নিয়ে গেছে বিশ্বজিত ও তার ভাই।
এ ঘটনায় আশিষ বনিকের স্ত্রী বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সন্দ্বীপ থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, মামলার আবেদন পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
মন্তব্য করুন