সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ পাচার, ৩ বন কর্মকর্তা বরখাস্ত
বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে ২০০টি সেগুনগাছ চুরি করে কেটে পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে বন বিভাগের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা জুলফিকার আলী,বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল ও বনপ্রহরী অলক সেন।
সোমবার (২০ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরিফুল হক বেলাল।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে রোপিত সেগুনগাছ কেটে পাচার করা হয় বলে বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন লামা পৌরসভা এলাকার মধুঝিরি গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান কালাম নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রেফারফাঁড়ি বাজার থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে কাঁকড়াঝিরি ও দুপ্রোঝিরি ম্রোপাড়া এলাকায় নির্বিচার বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। পাচারকারীরা পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করে বিশাল বিশাল সেগুন গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। কিন্তু স্থানীয় বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা জানা সত্ত্বেও নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। এতে প্রমাণিত যে, তাদের যোগসাজশে সংরক্ষিত বনের কোটি টাকার গাছ পাচার করা হয়েছে।
তবে তৈনরেঞ্জের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন,কাঁকড়াঝিরি ও দুপ্রোঝিরির বনাঞ্চলের কিছু গাছ চুরি করে কেটে পাচার হয়েছে ঠিক। কিন্তু তারা জানতেন না। ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা বনপ্রহরী বিষয়টি তাদের জানাননি। পরে তারা জানার পর তদন্ত করে দেখেছেন,পাচারকারীরা চুরি করে গাছ কেটে পাচার করে আবার ঊর্ধ্বতনদের কাছে বনাঞ্চল উজাড় হওয়ার অভিযোগও করেছেন। তবে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল জানান, গাছ চুরির ঘটনা জানার পর গত ৩০ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী, বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল ও একজন বনপ্রহরীকে রেঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিভাগীয় তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনজনকে স্থায়ীভাবেও চাকরি থেকে অপসারণ করা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন