ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২৬ মে) রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানান প্রস্তুতির কথা গণমাধ্যমে জানানো হয়।
জেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং, পৌরসভায় ২৯টি এবং ১০টি উপজেলায় ৩২২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ, আনসার, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
এ দিকে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সতর্কতায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের উদ্দেশ্যে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। বিকেল থেকে রাঙ্গামাটিতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
রাঙ্গামাটির শহরের ভেদভেদী, রূপনগর, শিমুলতলীসহ আরো কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে অন্তত দশ হাজারের বেশিও মানুষ। ২০১৭ সালে এই স্থানগুলোতে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেসময় অর্ধশতাধিক লোকের মৃত্যু হয়। যাতে পুরো জেলায় মৃত্যুবরণ করেন ১২০ জন। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু না হওয়ায় তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। তাদের দাবি, যখনই ভারী বৃষ্টিপাত হবে, তখন তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাবেন।
ভেদভেদী এলাকার বাসিন্দা ছগির মিয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হবে টিভিতে ও সংবাদে শুনতেছি, দুপুরে এ দিকে এসে মাইকিংও করেছে। তবে এখনও তেমন কোন প্রভাব আমরা দেখছি না। যদি খারাপ অবস্থা দেখি তবে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাবো।’
রূপনগরের বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ২০১৭ সালে পাহাড় ধসে ১৯ জন মারা গেছেন একদিনে। তাই পাহাড় ধস হবে বললে ভয় লাগে। প্রশাসন থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছে, নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। যদি অবস্থা সুবিধার না দেখি তবে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবো।’
সুরেশ চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ধস হতে পারে বলে শুনেছি। যদি সে রকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাই, তবে বউ-বাচ্চা নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।’
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘রাঙ্গামাটি পৌর এলাকাসহ প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র ও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে রেখেছি।’
মন্তব্য করুন