নরসিংদীতে আ.লীগ নেতাকে হত্যা
ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২২ জনের নামে মামলা
নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হাসান (৪০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিত ও ইউপি সদস্য আতাউর ভূঁইয়াসহ ২২ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ৪২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নিহতের ছোট ভাই হাফিজ ইসলাম বাদী হয়ে মাধবদী থানায় মামলাটি করেন। এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তবে গ্রেপ্তারের স্বার্থে অন্য আসামিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজী হননি তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগীরথপুর এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলের সামনে মাহাবুবুল হাসানকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সঙ্গে থাকা সাঈদ হাসান (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৩৭) নামের দুই কর্মী।
নিহত মাহাবুবুল হাসান সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগীরথপুর এলাকার মো. ইমাম উদ্দীনের ছেলে।তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য দিনের মত গত মঙ্গলবারও বেশ রাত পর্যন্ত কর্মীদের নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছিলেন মাহাবুবুল হাসান। পরে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে কর্মীদের সঙ্গে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। রাত পৌনে ১২টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিতের ব্যক্তিগত কার্যালয়সংলগ্ন ওবায়দুল্লাহ টেক্সটাইল মিলের সামনেই হামলার ঘটনা ঘটে।
টেক্সটাইল মিলটির বিপরীত পাশের গলির মুখে দাঁড়ানো একটি বালুভর্তি ট্রাকের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন আসামিরা। ট্রাকটি অতিক্রম করার সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় ও গুলি ছুড়ে।
হামলাকারীদের একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাহাবুবুল হাসানের কান থেকে ঘাড় বরাবর কোপ দেয়। মাহাবুবুলকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সাঈদ ও ফরহাদ নামের তাঁর দুই কর্মী। পরে তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহাবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, ধারালো অস্ত্রের কোপে মাহাবুবুলের বামপাশে কানের ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত প্রায় ৮ ইঞ্চির মত গভীর ক্ষত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তিনি মারা যান। পরদিন ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসক তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি গুলির অস্তিত্ব পান।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, নিহতের ছোটভাই হাফিজ ইসলাম ২২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আগে আটক করা ৬ জনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এজাহারভুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন