ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগ কর্মী হত্যা, ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুল রহমান ইজাজকে (২২) হত্যার ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে নিহত তরুণের বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ১ ও ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন খোকা ও জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি মো. হাসান আল ফারাবী জয়কে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাফি আলম (২৮) ও তার বড় ভাই সাগর (৩২), কাউতলীর শাহাদাৎ হোসেন ওরফে সানি (২৮), কলেজপাড়ার অপু (৩০), মামুন (৩৮), মাসুম (৪০), শাহরিয়ার ওরফে লাদেন (২২), রুবেল (২৮), অলি (৩০), রুমান (৩৫), তারেফ (৩০), সৌরভ (৩০), মামুন (২৮), মুরসালিন (২৮)।
এর আগে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পর শহরের কলেজপাড়ায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা আমিনুর রহমানের ছেলে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের পক্ষের কর্মী ছিলেন। আসামি হাসান আল ফারাবীও নির্বাচনে শাহাদাৎ হোসেনের পক্ষে কাজ করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কলেজপাড়ার বাসা থেকে কলেজে আসা-যাওয়া অবস্থায় জালাল হোসেনের সঙ্গে নিহত আশরাফুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। জালাল তার অনুগত বাহিনীর মাধ্যমে কলেজপাড়ায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন। গত বুধবার সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়। আশরাফুল ক্রিশ্চিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুল ভোটকেন্দ্রে ভোটারের সারিতে দাঁড়াতে যান। জালাল জোর করে ভোট দিতে গিয়ে সারি ভেঙে আশরাফুলকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। এর প্রতিবাদ করলে জালালের নেতৃত্বে আসামিরা আশরাফুলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্দেশে রওনা হন আশরাফুল। বিকেল সোয়া ৬টার দিকে কলেজপাড়ার জামাল মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তায় পৌঁছালে জালালসহ আসামিরা পিস্তল, রামদাসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আশরাফুল ও তার বন্ধুদের পথরোধ করেন। জালাল তার হাতে থাকা পিস্তল হাসানের হাতে তুলে দিয়ে আশরাফুলকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। হাসান আল ফারাবী পিস্তল দিয়ে আশরাফুলের মাথার বাঁ পাশে গুলি করেন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসক জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে আশরাফুল মারা যান।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের নিয়াজ মুহম্মদ ষ্টেডিয়ামে তার প্রথম জানাজা এবং রাতে গ্রামের বাড়ি সুহিলপুরে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে সুহিলপুর গ্রামে দাফন করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। শহরের প্রবেশপথগুলোতে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন