সংখ্যালঘুদের জমি দখল বেনজীরের, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে আরজি রানা দাশগুপ্তের
সংখ্যালঘুদের জমি পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ যেভাবে দখল করেছেন, সেই বর্ণনা শুনতে ওই এলাকা ঘুরে দেখার অনুরোধ করেছেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। এ সময় তিনি গোপালগঞ্জে হিন্দুদের শত শত বিঘা জমি দখল করার অভিযোগ আনেন।
রানা দাশগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এলাকাটি আপনারই। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) একবার এলাকায় আসুন, আপনি দেখে যান, বেনজীর কীভাবে এখানকার সংখ্যালঘুদের জায়গা-জমি জবরদখল করেছেন। আমরা আবেদন জানাই, যাদের সম্পত্তিগুলো দখল করা হয়েছে, তাদের সম্পত্তিগুলো ফেরত দেওয়া হোক।’
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ভুক্তভোগী লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন রানা দাশগুপ্ত।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কৃষির ওপর নির্ভরশীল ওই এলাকার মানুষদের জমি দখল করে ফেলায় তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিশাল অর্থনৈতিক সংকট নেমে এসেছে। হিন্দুদের শত শত বিঘা জমি জোর করে, হুমকি দিয়ে, নানাভাবে চক্রান্ত করে বেনজীর দখল করে নিয়েছেন। শুধু দখলই করেননি, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে এমনভাবে চারদিকে বেষ্টনী করেছেন। যাতে অন্য কেউ ওই জায়গায় প্রবেশ করতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলো এদের (বেনজীর ও জেনারেল আজিজ) কারণেই হয়েছে। হয়তো নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সময় আমরা এই বিষয়গুলো জানতাম না বলেই অনেক সময় মনে করেছি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’
এ সময় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল, মনিন্দ্র কুমার নাথ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার সাহা, পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, সহসভাপতি শিপ্রা বিশ্বাস, সদস্য ডেভিড বৈদ্য প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালে র্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আইজিপি থাকার সময়ে বেনজীর আহমেদ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা (দুদকের তথ্য অনুযায়ী) জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এ রিসোর্ট ও পার্কের সব জমি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাদের ভাষ্য, ভয় দেখিয়ে, জোর করে ও নানা কৌশলে জমি কেনা হলেও অনেক জমি দখল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে দুদক তদন্ত শুরু করে। পরে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
মন্তব্য করুন