ঈদে পর্যটন ব্যবসা চাঙা কক্সবাজারে
ঈদুল আজহার ছুটির শেষ দিকে আশানুরূপ পর্যটক সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। ঈদের চতুর্থ দিনে প্রায় আবাসিক হোটেলে শতভাগ বুকিং রয়েছে। সমুদ্র সৈকতেও উপচেপড়া ভিড়। অথচ, ঈদের প্রথম দিন থেকে পর্যটক খরায় ভুগছিল হোটেলগুলো। রেললাইন যাতায়াতের সুব্যবস্থার কারণে পর্যটকরা আগের তুলনায় বেশি আসছেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। পর্যটক সমাগম হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝেও চাঙাভাব লক্ষ্য করা গেছে।
এবার ঈদুল আজহায় টানা পাঁচ দিনের ছুটি ছিল। ঈদের প্রথম দিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের চেয়ে স্থানীয়দের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
তবে, বৃহস্পতিবার ঈদের চতুর্থ দিন ছিল এর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এদিন সৈকতের মূল তিনটি পয়েন্ট কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা পর্যটক আহসান হাবিব জানান, এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে পরিবারসহ কক্সবাজার ঘুরতে এসে ভালো লাগছে। সমুদ্র সৈকতে কাটানো মুহূর্তগুলো সত্যিই আনন্দদায়ক।
রাজশাহী থেকে আসা আরেক পর্যটক ইফতেখার উদ্দিন জানান, এখানকার পরিবেশ খুবই চমৎকার। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, এবার ঈদুল আজহার ছুটির প্রথম দিক থেকেই কক্সবাজারের তারকা মানের হোটেলগুলোতে আশানুরূপ পর্যটক এসেছে। নিম্ন ও মাঝারি মানের হোটেলে ছুটির শেষদিকে পর্যটক উপস্থিতি বেড়েছে। অথচ, প্রথমদিকে পর্যটকদের উপস্থিতি কম থাকায় আমরা হতাশ ছিলাম।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পর্যটন শহর কক্সবাজারে ছোট বড় মিলে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজে প্রতি ঈদের ছুটিতে প্রায় শতভাগ বুকিং থাকে। কিন্তু এবারের ঈদুল আজহার প্রথম দিকে মাত্র ৪০-৫০ ভাগ বুকিং ছিল। অবশেষে ছুটির শেষ দিকে আশানুরূপ বুকিং হয়েছে। এবার ছক্কা মেরেছে তারকা মানের হোটেলগুলো। ঈদের পুরো ছুটিতেই শতভাগ বুকিং আছে তারকামানের হোটেলগুলোতে।
তারকামানের হোটেল সি প্রিন্সেসের জেনারেল ম্যানেজার বদরুল ইসলাম জানান, এবার অন্য হোটেলের কথা বলতে পারব না, তবে আমাদের হোটেলে তিন-চার দিন শতভাগ বুকিং রয়েছে। তবুও বলব, অতীতের মতো ভালো ব্যবসা হচ্ছে না।
হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টের ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার সারোয়ার আলম বলেন, আমাদের হোটেলে বুকিং শতভাগ। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। রয়েছে বুফে লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থাও।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা বলেন, রেললাইন হওয়ায় আগের তুলানায় পর্যটক সমাগম বেশি হয়েছে। সত্যি আমরা আশান্বিত। এটা কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসার ক্ষেত্রে একটা ভালো দিক।
আবাসিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, কোরবানির ঈদের শেষের দিকে পর্যটক সমাগম বেশি হওয়ায় আগের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদারে বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ছুটির দিনগুলোতে সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন জোনে তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামরায় সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত আছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধার বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো যাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করে সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম।
মন্তব্য করুন