• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
logo

যে কারণে বরগুনায় ব্রিজ ভেঙে ৯ বরযাত্রী নিহত

আরটিভি নিউজ

  ২৪ জুন ২০২৪, ১৮:৫৫

বরগুনার আমতলিতে লোহার ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৯ জন বরযাত্রী নিহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে যখন ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন তারা। কিন্তু তাতে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। এমনকি নির্মাণের পর গত ১৬ বছরে একবারের জন্যও সেতুটি সংস্কার করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই ব্রিজ ভেঙেছে বলে অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, আমতলি উপজেলার হলদিয়া এবং চাওরা ইউনিয়নের মধ্যবর্তীস্থানে হালকা যান (ফুটওভার ব্রিজ) প্রকল্পের আওতায় ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর নির্মাণের জন্য ২০০৮ সালের ৩১ অক্টোবর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। সেতুটি নির্মাণের পর একবারের জন্যও আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় বিপদ এড়াতে সেতুর পাশে বিপদজনক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। আর গাড়ি চলাচল না করার জন্য পুঁতে রাখা হয় গাছ। মানুষের জীবন-মালের কথা ভেবে গাছটি পুঁতে রাখা হলেও পরে সেটি তুলে ফেলা হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ জন্য সেতু নির্মাণে অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে সেতু নির্মাণের সময় অনিয়ম করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বারবার অভিযোগ করেও এর প্রতিকার মেলেনি। ব্রিজ দিয়ে ভারী পণ্য সরবরাহ করা হতো। যে কারণে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অবৈধ পরিবহন নিয়েও অভিযোগ করেছিলেন তারা। কিন্তু তাদের অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি। লোহার ব্রিজটিতে যান চলাচল রোধে পুঁতে দেওয়া গাছের গুঁড়ি হামজা ও টাফি নামে পরিচিত অবৈধ যানবাহনের চালকরা তুলে ফেলে বলেও অভিযোগ তাদের। ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম এবং দায়িত্বে অবহেলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অবৈধ যান চলাচল রোধে তারা সচেষ্ট রয়েছেন।

এলজিইডির আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি এখানে যোগদান করেছি বেশিদিন হয়নি। তারপরও যতদূর জানি ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের এ এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত স্টিল স্টাকচারে মরিচা ধরেছে।

তিনি বলেন, আমরা আগেই এ সেতুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সেতুর উভয় দিকে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও প্রবেশমুখে গাছ পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাহিন্দ্র গাড়ি বা অন্য ভারী যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে রাতের আঁধারের কে বা কারা তা সরিয়ে ফেলেছে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন ও ইঞ্জিনিয়ারের সাইনবোর্ড দেওয়ার পর তাদের সাইনবোর্ডের গুরুত্ব বোঝা উচিত ছিল।

বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে সেতু ধসের প্রকৃত কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করা যাবে।

প্রসঙ্গত, বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৯ বরযাত্রী নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ জুন) দুপুরে বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া হাট ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস ও অটো খালে ডুবে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মাহাবুবের ভাই সোহেলের স্ত্রী রাইতি (৩০), মাহাবুবের মা ফরিদা বেগম (৪০), মামি মুন্নি বেগম (৪০), তার সন্তান তাহিয়া (৭), তাসদিয়া (১১), আরেক মামি ফাতেমা বেগম (৪০), রুমি বেগম (৪০)। এ ছাড়া আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া জহিরুল ইসলামের স্ত্রী জাকিয়া এবং মেয়ে রিদি (৫)।

আহত হয়েছেন মাদারীপুরের শিবচরের সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজ। এ ঘটনায় নির্মাণকারী ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার মানুষ।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রং নম্বরে প্রেম, প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে ৪০ বছরের নারী
এখনো ফেরেনি পাথরঘাটার ২৫০ জেলেসহ ২৩ ট্রলার
বরগুনায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সভায় মারামারি, অস্ত্রসহ আটক ১
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে পেটানো কে এই যুবক