এক মুঠো বালু ছিটানোই কাল হলো শিশু মাইশার
নরসিংদীর পলাশে নিখোঁজের চারদিন পর সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম মাইশা আক্তার। এ ঘটনায় জালাল শেখ (৪৯), স্ত্রী মাহফুজা ও ছেলে বিল্লাল নামে তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। আটককৃতদের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি গ্রামে। পলাশে তারা একটি ভাড়া বাসায় থাকত। নিহত মাইশা আক্তার জয়নগর গ্রামের মেহেদী হাসানের মেয়ে। শিশুটি ২১ জুন থেকে নিখোঁজ ছিল।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পলাশ থানার ওসি জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, শিশু মাইশা নিখোঁজের ঘটনায় ডাংগা থেকে জামাল শেখ নামে বাড়ির ভাড়াটিয়াকে র্যাব আটকের পর তার দেওয়া তথ্যমতে ছাদে সেপটিক ট্যাংক থেকে মাইশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় ভাড়াটিয়া জালাল শেখ, স্ত্রী মাহফুজা ও ছেলে বিল্লালকে র্যাব আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করছে। শিশুটিকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে তা আটকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর বিস্তারিত জানাতে পারব।
শিশুটির বাবা মেহেদি হাসান বলেন, ‘গত শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে সহপাঠীদের নিয়ে খেলা করছিল মাইশা। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে উঠলে তার কোন সন্ধান না পেয়ে একপর্যায়ে থানায় নিখোঁজের জিডিও করি আমরা।তবে কে জানতো বাড়ির পাশের প্রতিবেশীদের কাছে নির্মম হত্যার শিকার হতে হবে আমার মেয়েকে। আইসক্রিম তৈরির দুধে বালু পড়ায় প্রতিবেশী জালাল মিয়া, তার স্ত্রী মাহফুজা খাতুন ও ছেলে বিল্লাল শেখ আমার মেয়ে মাইশাকে ধরে এনে বাড়ির মধ্যে হত্যা করে। তারপর মরদেহ সেপটিক ট্যাংকিতে লুকিয়ে রাখে।’
এ বিষয়ে র্যাব-১১ এর নরসিংদী ক্যাম্পের এএসপি নিশাত তাবাচ্ছুম বলেন, ‘শিশুটি নিখোঁজের পর থেকে তদন্তে নামে র্যাব-১১ এর নরসিংদী ক্যাম্পের একটি টিম। ঘটনার দিন পাশের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও দেখে জালাল শেখের ছেলে বিল্লাল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জালাল শেখ ও মাহফুজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ লুকিয়ে রাখার তথ্য পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বালু ছিটানো নিয়ে শিশুটিকে অসতর্কতামূলকভাবে মারধরের কারণে তার মৃত্যু হলে মরদেহ গুম করার চিন্তায় বাড়ির পাশের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে বলে স্বীকার করেছে আসামিরা।’
এ দিকে শিশু মাইশার মৃত্যুতে শোকে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। তুচ্ছ বিষয়ে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মানতে পারছেন না কেউ। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।
মন্তব্য করুন