• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১
logo

কিশোর তপু অপহরণ ও হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করল পুলিশ

পাবনা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৫ জুন ২০২৪, ১৯:৩৫
ছবি : আরটিভি

পাবনার ঈশ্বরদীর চাঞ্চল্যকর কিশোর তপু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া এলাকার জয়নাল আবেদীন জয় (২০) এবং ঈশ্বরদী পৌর সদরের মশুরিয়াপাড়া এলাকার ঈসা খালাশি (১৯)। এ ঘটনায় সোহেল নামের আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। নিহত তপু হোসেন মশুরিয়াপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ জুন দুপুরে ঈশ্বরদীর মশুড়িয়াপাড়ার কিশোর তপু (১৪) নিজ বাড়ি থেকে বাহির হয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর অজ্ঞাত অপহরণকারী কিশোর তপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তপুর বাবাকে ফোন করে তপুকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

৭ হাজার টাকা দেওয়ার পরও তপুর খোঁজ না পাওয়ায় তপুর মা মজিরন বেগম বাদী হয়ে পরদিন ১৬ জুন ঈশ্বরদী থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মূল আসামিদের শনাক্ত করা হলেও তপুর সন্ধান পাচ্ছিল না পুলিশ। নিখোঁজের আটদিন পর গত ২২ জুন মশুড়িয়াপাড়াস্থ অরণ্য ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলায় একটি টিনের বাক্স থেকে তপুর অর্ধগলিত রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর ঢাকায় পালানোর সময় পাবনা শহরের ঢাকাগামী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রধান অভিযুক্ত জয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশকে জানিয়েছে তারা ঈশ্বরদী কলেজের পেছনে অরণ্য ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকত। ভুক্তভোগী তপুর বাড়ি ছাত্রাবাসের পাশেই হওয়ায় এক সঙ্গে ফ্রি-ফায়ার গেম, আড্ডা দিত ও ধূমপান করত। জয় ইতোপূর্বে আতাইকুলা থানার একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় মামলার খরচ, ছাত্রাবাসে খরচ এবং মাদক সেবনের জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সোহেল ও ঈসার সঙ্গে অপহরণের পরিকল্পনা করে।

সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কৌশলে তপুকে ছাত্রাবাসে ডেকে এনে জিম্মি করে। তপু আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলে তারা চাকু দিয়ে হত্যা করে এবং বেল্ট দিয়ে তার হাত বেধে একটি বাক্সে ভরে রাখে। পরবর্তীতে আসামি জয় ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার বাবা কাছে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে।

গত ২২ জুন দুপুরে অরণ্য ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলায় সন্দেহভাজন আসামি জয়ের কক্ষ থেকে উৎকট গন্ধ আসতে থাকে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় নিখোঁজ তপুর বাবা-মাকে খবর দেয়া হয়। এছাড়াও মেসের মালিকসহ আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে কক্ষটির তালা ভেঙে টিনের বাক্সের ভেতর থেকে অর্ধগলিত রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। নিখোঁজ তপুর বাবা-মা লাশটি তাদের ছেলে তপুর বলে শনাক্ত করে।

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সোমবার (২৪ জুন) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মাসুদ আলম, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম, ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পাবনায় প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা: নিহত বেড়ে ৫
পাবনায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ৪
পাবনায় পুলিশকে পিটুনি, কাউন্সিলরসহ আটক ৩
অপমান সইতে না পেরে নবদম্পতির আত্মহত্যা