কক্সবাজারে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
![কক্সবাজারে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280310-1719585282.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ পাড়া এলাকায় এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধুর নাম জয়নাব কাশেম জেসি।
শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান।
নিহত জেসি স্থানীয় মেহেদী হাসানের স্ত্রী। এ ঘটনায় তার স্বামী মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধূ মেহেদী হাসানের দ্বিতীয় স্ত্রী। তার দুই স্ত্রী লাইট হাউজ পাড়ার ওই বাড়িতে থাকেন।
এ বিষয়ে ওসি মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।’
মন্তব্য করুন
নদীতে ভাসছিল কালো রঙের ট্রলি ব্যাগ, অতঃপর...
ময়মনসিংহে সেতুর নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় একটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পা ও মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।
রোববার (২ জুন) সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে লাশটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উদ্ধার করে।
জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, লাশটি একটি কালো রঙের ট্রলি ব্যাগের ভেতরে ছিল; মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আলাদা পলিথিনে মোড়ানো ছিল। এখন পর্যন্ত লাশটির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
তিনি আরও জানান, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সুতিয়া নদীর। ওপর সেতুর নিচে একটি কালো ব্যাগ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই ট্রলি থেকে লাশটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে।
![নদীতে ভাসছিল কালো রঙের ট্রলি ব্যাগ, অতঃপর...](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/02/image-276354-1717309294.jpg)
প্রেমের জেরে ৪ টুকরো জবি শিক্ষার্থী সৌরভ!
ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ওরফে সৌরভকে (২২) উদ্ধার করা হয়েছে। চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করায় চাচার হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ইলিয়াসকে খুঁজছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত মে মাসে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আপন চাচা ইলিয়াসের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন সৌরভ। তবে তার চাচা কোনভাবেই এই বিয়ে মেনে নেননি। বিভিন্ন সময় ইলিয়াস সৌরভের বাবা ইউসুফকে বিভিন্ন রকম হুমকি দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে বিষয়টি পরিবারের অনেককেই জানিয়েছেন ইউসুফ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌরভের এলাকা সম্পর্কিত দাদা লুৎফর রহমান বলেন, ‘ সৌরভের বাবা ইউসুফ কয়েক দিন আগে আমার কাছে পরামর্শ চায় কী করা যায়। ইউসুফ থানায় ইলিয়াসের নামে জিডি করবে কি না, এ পরামর্শও চায়। কিন্তু নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে জিডি করতে আমি নিরুৎসাহিত করি।’
তিনি আরও জানান, ‘এর মধ্যে ইলিয়াসের মেয়ে সৌরভের কাছ থেকে কানাডায় চলে গেছে বলে আমাকে জানায় ভাতিজা ইউসুফ। এ ঘটনা নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন ছিল সৌরভের বাবা। এ অবস্থায় শনিবার রাত ৯টার দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, সৌরভ সন্ধ্যার দিকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এখন তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জানানো হয় নিখোঁজ সৌরভের লাশ পাওয়া গেছে।’
ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের ওসি ফারুক আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা অনেকাংশে নিশ্চিত যে পারিবারিক কারণে সৌরভকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা সৌরভের চাচা ইলিয়াসকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। তিনি পলাতক রয়েছেন। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারব।’
এর আগে রোববার (২ জুন) সকালে ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে উদ্ধার করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভের লাগেজবন্দি চার খণ্ড মরদেহ। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের।
![প্রেমের জেরে ৪ টুকরো জবি শিক্ষার্থী সৌরভ!](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/03/image-276474-1717357011.jpg)
কানাডায় আগের স্বামীর কাছে ইভা, সৌরভকে বাসায় ডেকে ৪ টুকরো
ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ওমর ফারুক সৌরভ (২৩) হত্যার ঘটনায় চাচাতো বোন ইসরাত জাহান ইভার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। সৌরভের আগে কানাডা প্রবাসী আব্রাহাম নামে একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় ইভার। বর্তমানে তিনি কানাডায় আছেন।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইলিয়াসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, ‘তিন বছর আগে আব্রাহাম নামের কানাডা প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় ইভার। এরপরও সৌরভের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন তিনি। গত ১২ মে গোপনে বিয়েও করেন তারা। তবে পরিবার না মানায় প্রথম স্বামী আব্রাহামের কাছে কানাডায় চলে যান ইভা। বর্তমানে তিনি কানাডায় আগের স্বামীর সঙ্গে রয়েছেন।
এদিকে, ইভাকে খুঁজতে গত ১ জুন ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে সৌরভের আসার বিষয়টি ইলিয়াসকে জানায় তার ছেলে মৃদুল। পরে সৌরভকে সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ শহরের গোয়াইলকান্দি এলাকায় বাসায় ডেকে আনেন চাচা ইলিয়াস। একপর্যায়ে তার হাত-পা বেঁধে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। এরপর শহরের গাঙ্গিনারপাড় থেকে পলিথিন ব্যাগ ও একটি লাগেজ কেনা হয় । বাসায় ফিরে চাপাতি দিয়ে মরদেহ টুকরো টুকরো করে ভরা হয় লাগেজে। ঘণ্টা দুয়েক পর মরদেহের ট্রকরোগুলো একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারে তোলা হয় । উদ্দেশ্য ছিল সেগুলো যমুনা নদীতে ফেলে দেওয়ার। তবে তা সম্ভব হয়নি।
গত ২ জুন সকালে ময়মনসিংহ সদরের সীমান্তবর্তী মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে সৌরভের চার টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কালো রঙের একটি ট্রলিব্যাগ থেকে তিন টুকরো এবং পাশেই একটি বাজারের ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় মাথা উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ৩ জুন রাতে গ্রামের বাড়িতে ওমর ফারুকের মরদেহ দাফন করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ২ জুন রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, সে-ই আমার সন্তানকে হত্যা করল! আমার সন্তানকে না মেরে আমাকে মারত। তার কী এমন দোষ ছিল? শুধু কি আমার ছেলেই তোর (ইলিয়াস) মেয়েকে ভালোবেসেছে? তোর মেয়ে কি ভালোবাসে নাই? যদি তোর মেয়ে ভালো নাই বাসত, তাহলে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় গিয়ে কেন আমার ছেলেকে বিয়ে করল? সৌরভের বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে আমার ছোট ভাই আমাকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়েছে। আমি এই হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত সবার ফাঁসি চাই।’
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সৌরভের মা মাহমুদা আক্তার। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ভালোবেসে চাচাতো বোনকে বিয়ে করাই আমার ছেলের কাল হয়েছে। আমরা কোনোদিন ভাবিনি, আপন চাচা তার ভাতিজাকে এভাবে হত্যা করবে! এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আমার সাজানো সংসার ছিল। ইলিয়াস সবকিছু এলোমেলো করে দিল।’
![কানাডায় আগের স্বামীর কাছে ইভা, সৌরভকে বাসায় ডেকে ৪ টুকরো](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/04/image-276767-1717511158.jpg)
ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়েরও
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুর ২টায় উপজেলা বারবাড়িয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই এলাকার হেলাল উদ্দিন মাস্টারের স্ত্রী শিরিনা খাতুন (৫৫) ও তার ছেলে ইশতিয়াক আহমেদ শিমুল (২২)।
বারবারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, সকালের দিকে গফরগাঁওয়ে বৃষ্টি হয়েছিল। ওই বৃষ্টিতে একটি পুকুরের সেচ মটর বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। দুপুরে মৃত শিমুল মটরটি চালু করতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে ছটফট করতে থাকেন। এ সময় ছেলের ছটফটানি দেখে মা শিরিনা আক্তার ছেলেকে বাঁচাতে যান। এতে দুজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান খান বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত জেনে জানানো হবে।
![ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়েরও](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/06/image-277084-1717675231.jpg)
‘৮ দিন আগে বিয়ে করেছিলাম, তারা আমার স্বামীকে মেরে ফেললো’
কক্সবাজারের কলাতলী সমুদ্রসৈকতের বেলি হ্যাচারি পয়েন্টে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে তারকা মানের হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন হেরিটেজের কর্মচারী নিহত হয়েছেন।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন। নিহত নুরুল কাদের (২৩) চকরিয়া উপজেলার বড়ইতলীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপরপাড়ার বাসিন্দা ইব্রাহীমের ছেলে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী তসলিমা আকতার জানান, ‘মাত্র ৮ দিন আগে সবার অগোচরে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। আজ বেলী হ্যাচারি পয়েন্ট ঘুরতে এসে আমার স্বামীকে হারালাম। তারা (ছিনতাইকারীরা) আমার স্বামীকে ছুরিকাঘাতে মেরে ফেলেছে। এখন সৈকত দেখতে যাওয়াই আমার কাল হলো।’
তিনি বলেন, ‘হোটেলের ডিউটি শেষ করে সন্ধ্যা ৬ টায় সৈকতের বেলী হ্যাচারি পয়েন্টে ঘুরতে যাই। দুজন সৈকতে বসে লুডুও খেলি। পরে ফেরার সময় পথ আটকায় ছিনতাইকারীরা। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে কাদেরকে ছুরি মেরে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে কাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’
জানা গেছে, কলাতলীর মোড়ের একটি তারকামানের হোটেলে কাজ করেতেন নুরুল কাদের ও তসলিমা আকতার।
শেফ সহকারী মোহাম্মদ বাদশা বলেন, ‘হোটেলের কাজ শেষ করে নুরুল কাদের ও দুই সহকর্মী সন্ধ্যায় সৈকতে ঘুরতে যান। এ সময় ছিনতাইকারীরা নুরুল কাদেরের মোবাইল কেড়ে নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। তাদের মধ্যে ধস্তা-ধস্তির এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা নুরুল কাদেরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ‘বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’
![‘৮ দিন আগে বিয়ে করেছিলাম, তারা আমার স্বামীকে মেরে ফেললো’](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/10/image-277618-1717971316.jpg)
সকালে স্ট্যাটাস পুত্র সন্তানের মা হওয়ার, রাতে মৃত্যু
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ফেরিঘাট এলাকা মাহবুবা নাজমিন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে ছেলে সন্তানের মা হন তিনি। এরপর ফেসবুকে সন্তানের জন্য দোয়া কামনা করে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন নাজমিন। নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, পুত্র সন্তানের মা হলাম।’
কিন্তু এই আনন্দ তার স্থায়ী হয়নি। এদিন রাতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় নাজমিনের। একপর্যায়ে হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
নাজমিনের স্বামী দুবাই প্রবাসী মো. রিমনও সেখানে বসে সন্তান জন্মের আনন্দে শামিল হয়েছিলেন। তিনিও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। ফেসবুকে রিমন লিখেছিলেন, ‘আল্লাহ তায়লার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া, আমাকে রাজপুত্র দান করেছেন। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন, আলহামদুলিল্লাহ। সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।’
রিমনের এই আনন্দ স্থায়ী হয়নি। স্ত্রীকে দাফন করতে দেশে আসবেন তিনি। দেখবেন তার শিশুপুত্রকেও। তবে সেই দেখায় আর আনন্দ থাকবে না।
জানা যায়, সোমবার (১০ জুন) রাতে নাজমিনের প্রসব ব্যথা উঠলে স্বজনরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। মঙ্গলবার সকালে সিজারিয়ার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমিনের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এরপর তিনি সুস্থ ছিলেন বলে জানান স্বজনেরা। তবে বিকেলের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাতে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
নাজমিনের স্বজনদের দাবি, প্রসবজনিত জটিলতা থেকে নাজমিনের মৃত্যু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনায় অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। এফ আই বাবু নামে একজন লিখেছেন, ‘মা এমনিই হয়। সকালে ছেলেকে দুনিয়ার আলো দেখিয়েছে। রাতে মা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল।’
![সকালে স্ট্যাটাস পুত্র সন্তানের মা হওয়ার, রাতে মৃত্যু](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/12/image-278114-1718210714.jpg)
ফোন বন্ধ থাকলে বুঝবা আমাকে মেরে ফেলেছে, মাকে মেয়ের শেষ কথা
প্রায় দুই বছর আগে সিনথিয়া ইসলাম খুসবুকে বিয়ে করেন আক্কাস আলী রনি (২৬)। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল। মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে ফেনী পৌরসভার চর গণেশ এলাকার ভাড়া বাসায় বাজার আনা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে বুধবার (১২ জুন) ভোরে খুসবুকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আক্কাস। পরে থানায় এসে নিজেই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করেন। তাদের বাড়ি ভোলা জেলায়।
বুধবার সকালে সিনথিয়া ইসলাম খুশবুর মা লিপি আক্তার জানতে পারেন তার মেয়ে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন। এদিন রাতেই ঢাকা থেকে তিনি ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানায় আসেন।
এ সময় কাঁদতে কাঁদতে লিপি বেগম বলেন, পরিবারের অমতে আক্কাসকে বিয়ে করে সিনথিয়া। পরে তাদেরকে আমরা ঢাকায় আসতে বলি। কিছুদিন ধরে আলী আক্কাস ব্যবসা করার জন্য সিনথিয়ার মাধ্যমে টাকা চাইতে থাকে। আমরা বলেছি, তোমরা ঢাকায় আসলে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ঢাকায় না গিয়ে আক্কাস সিনথিয়াকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর সিনথিয়া আমাকে বারবার ফোন দিতে থাকে। ফোন ধরার পর সিনথিয়া জানায় যে আক্কাস তাকে টাকার জন্য প্রচণ্ড মারধর করছে। এরপর রাত সাড়ে তিনটার দিকে মেয়ে আবারও ফোন দিয়ে বলে, `মা, আমার ফোন বন্ধ থাকলে বুঝবা, তোমাদের জামাই আমারে মেরে ফেলেছে।’ আর সকাল হতে না হতেই থানা-পুলিশ মুঠোফোনে জানায়, আমার মেয়েকে আক্কাস জবাই করে হত্যা করেছে।
বুধবার রাতেই সিনথিয়ার মা বাদী হয়ে আলী আক্কাসকে আসামি করে রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফনের জন্য ঢাকায় নিয়ে যায় সিনথিয়ার পরিবার।
সিনথিয়ার মুঠোফোন থেকে উদ্ধার হওয়া কাবিন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ১ লাখ টাকা দেনমোহরে ফেরিওয়ালা আলী আক্কাসকে বিয়ে করেন সিনথিয়া। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্কাসের কাছে চলে আসার পর মা লিপি বেগমকে জানান তারা বিয়ে করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শৈবাল বড়ুয়া বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনথিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলী আক্কাসকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে আক্কাস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়।
![ফোন বন্ধ থাকলে বুঝবা আমাকে মেরে ফেলেছে, মাকে মেয়ের শেষ কথা](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/13/image-278267-1718298930.jpg)