• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১
logo

শ্রীপুরে রসালো লটকনের সফল চাষ

  ৩০ জুন ২০২৪, ১০:৫৬
ছবি : আরটিভি

ঘন সবুজ পাতার ভেতরে ডালপালা ফেটে বের হওয়া বোটায় ঝুলছে অসংখ্য রসালো লটকন। কোনো গাছে সবুজ আবার কোনো গাছে কিছুটা হলুদ বর্ণের পাকা লটকন ঝুলতে দেখে যে কারোরই মুগ্ধ হতে হবে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী গ্রামের চাষি ডা. আবুল অফা জাকারিয়ার লটকন বাগানের দৃশ্য এটি।

এ বছর প্রায় একশটি লটকনের চারা থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। গত সাত বছর আগে শুরু করে কম পরিশ্রম ও পরিচর্যায় চার বছরের মাথায় ফলন পেতে শুরু করেন। এ বছর তিনি তৃতীয়বারের মতো ফলন পেতে যাচ্ছেন। তার বাগান দেখে আশপাশের এলাকার শতাধিক চাষি ইতোমধ্যে লটকনের চাষ শুরু করেছেন। লটকন চাষিদের দাবি আগামীতে তেলিহাটীর তালতলা গ্রামটি লটকনের গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।

পেশায় হোমিও চিকিৎসক আবুল অফা জাকারিয়া। একজন সফল চাষি হিসেবেও এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে। একখণ্ড জমিতে প্রায় দুই যুগের বেশি লেবু চাষ করেছেন। লেবুর ফলন ভালো হলেও উৎপাদন ব্যয়ের বিপরীতে বিক্রি ভালো না হওয়ায় গত সাত বছর আগে ওই জমি থেকে লেবু গাছ সরিয়ে ফেলেন। শুরু করেন লটকনের চাষ। নরসিংদী এলাকা থেকে লটকনের চারা সংগ্রহ করে পরিচর্যা শুরু করেন। চার বছরের মাথায় ৫০০ কেজি লটকন উৎপাদন হয়। পরের বছর ৭০০ কেজি এবং চলতি বছর ১ হাজার কেজি ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।

চাষি আবু ইউসুফ বলেন, ডা. জাকারিয়ার বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে আমি নিজেও লটকনের বাগান করেছি। তালতলী এলাকায় লটকনের চাষ ভালো হয়। একসময় তালতলী গ্রাম লটকনের গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হবে।

কৃষি উদ্যোক্তা ডা. আবুল অফা জাকারিয়া বলেন, আমি প্রথমে এ বাগানে আড়াই’শ লেবুর গাছ লাগিয়ে লেবু বাগান করেছিলাম। যখন দেখলাম একশ বস্তা লেবু বিক্রি করে বস্তা প্রতি একশ টাকাও পাই না তখন আমি লেবু গাছ কেটে লটকন গাছ লাগিয়েছি। এখন খুব লাভবান। ইতোমধ্যে একটি গাছ থেকে ২০ কেজি লটকন নামিয়ে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করি। আরও ১৫ দিন লটকন পাকা পুরোদমে শুরু হবে।

তিনি বলেন, সাত বছর আগে নরসিংদী এলাকা থেকে লটকনের চারা নিয়ে আসি। প্রথমে একশ পরের বছর আরও একশ এবং সবশেষ আরও একশ সহ মোট ৩০০ চারা আনি। নিজেদের মধ্যে বিতরণ করি। আমি একশ চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করি। এ বছর ১ হাজার কেজি বিক্রি করতে পারব। দিন যত যাবে ফলন তত বাড়বে।

কম পরিচর্যায় লাভবান একটা চাষের নাম লটকন। আমাদের এলাকায় মানুষ যেভাবে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে ১০ বছর পর অনেকেই করবে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও করা যাবে। এ পর্যন্ত আমার দেখাদেখি কমপক্ষে একশ লোক লটকনের বাগান করেছে। আমার কাছ থেকে অনেকে পরামর্শ নেন। তারা বেশিরভাগ নরসিংদী থেকেই লটকনের চারা নিয়ে আসে। পরিশ্রম কম হলেও শিডিউল অনুযায়ী লটকন বাগানের পরিচর্যা ও সার, কীটনাশক প্রয়োগ করলে ভালো ফলন আসে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বলেন, শ্রীপুর লটকন চাষের জন্য উপযোগী। শ্রীপুরে এবার ৮ একর জমিতে লটকনের চাষ হয়েছে। শ্রীপুরের কৃষকদের আমরা পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লটকন চাষে উদ্বুদ্ধ করে থাকি। কলমের মাধ্যমে চারা রোপণের জন্য উদ্বুদ্ধ করে থাকি। লটকন সুস্বাদু ফল হওয়ায় এটি সবাই চাষ করুক এমনটাই চাই।

মন্তব্য করুন

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শ্রীপুরে ট্রাকচাপায় তুলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা নিহত
গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ, চিকিৎসক গ্রেপ্তার 
চাচার মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ি যাওয়ার পথে প্রাণ গেল ভাতিজার
শ্রীপুরে প্রস্তুতি সভা থেকে বিএনপির ৪ নেতাকর্মী আটক