• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় নবজাতককে বিক্রি করে দিলেন বাবা

স্টাফ রিপোর্টার (চট্টগ্রাম), আরটিভি নিউজ

  ০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩
পুলিশ
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামে টাকার বিনিময়ে নবজাতক কন্যাসন্তানকে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে বাবার বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় টাকা ফিরিয়ে দিয়ে শিশু সন্তানটিকে মায়ের কোলে হস্তান্তর করে।

বুধবার (৩ জুলাই) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত বাবা উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কুলালপাড়া এলাকার বাসিন্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. সাদ্দাম (৩৫) ও মা সুমি আক্তার (২৪)।

জানা যায়, দুই কন্যার পর তৃতীয়বার কন্যাসন্তান হওয়ায় তিন কন্যার দায় এড়াতে নবজাতককে বিক্রি করেন শিশুর বাবা মো. সাদ্দাম।

এই বিষয়ে জানতে সাদ্দামের সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তার দাবি, অভাবের সংসারে নবজাতক শিশুর হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারায় তিনি এমনটি করেছেন। যারা নবজাতককে নিয়ে গেছেন তাদের বাড়ি উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নে। তাদেরও ১৪ বছরের সংসারে কোনো সন্তান না থাকায় বাচ্চাটাকে দত্তক নেন। তবে টাকার বিনিময়ে নয়, ৫০ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল ও চিকিৎসা বাবদ নিয়ে নিকটাত্মীয়ের কাছে তার কন্যাসন্তানকে দিয়েছেন বলে জানান অভিযুক্ত পিতা সাদ্দাম।

চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুমি আক্তার নামের এই গৃহবধূকে ২৭ জুন রাত ১টার দিকে হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক ডা. নিফা দেওয়ানের রেফারেন্সে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৯ জুন দুপুর ১টায় সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় নবজাতক কন্যাসন্তানের। চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে শিশুটির পিতা সাদ্দাম বাচ্চাটিকে অন্যত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চালালে কান্না করতে থাকেন মা সুমি আক্তার। পাশের এক রোগীকে রক্ত দিতে যাওয়া পারভেজ হোসাইন নামে এক যুবক বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। তিনি এ বিষয়ে নবজাতক শিশুর পিতার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, হাসপাতালের বিলের টাকা দিতে না পারায় অন্যত্র বাচ্চাটিকে দিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় পারভেজ চেষ্টা করেন নিজে টাকার ব্যবস্থা করে বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু বাবা রাজি না হওয়ায় তা পারেননি বলে জানান। বিষয়টি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে তা সবার নজরে আসে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিকে দেওয়ানজি বলেন, বাচ্চা বিক্রির ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। স্বাভাবিক নিয়মে ১৪ হাজার টাকা বিল আসে। ডাক্তারের রেফারেন্সে ২০০০ টাকা মওকুফ করে ১২ হাজার টাকায় ছাড় দেওয়া হয়।

এই ব্যাপারে মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু বলেন, অভাবের কারণে সিএনজি অটোরিকশা চালক সাদ্দাম হাসপাতালের খরচ বাবদ কিছু সুবিধা নিয়ে মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন মহৎ মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাকাগুলো অনুদান দেন। বিষয়টি নিয়ে স্ব নির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দিয়েছি। এ সময় ওই দম্পতিকে নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। এমনকি উপস্থিত অনেকে বাচ্চার মুখ দেখে আরও বেশ কিছু নগদ টাকাও উপহার দেন। বাচ্চাটির ভরণপোষণের ব্যাপারে আমরা সব সময় খবরাখবর রাখবো।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৩৪
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর
সিএনজি-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল যুবকের
পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে