চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ‘অসঙ্গতি’ পেয়েছে তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা দ্রুত গতির উড়ালসড়ক নির্মাণে ‘কিছু অসঙ্গতির’ তথ্য উঠে এসেছে। দ্রুত গতির উড়ালসড়কটি নির্মাণ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছিল, তা তদন্তে গঠিত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অনুসন্ধানে এসব অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে পরিদর্শন শুরু করে লালখান বাজার মোড়ে এসে শেষ করে কমিটি।
তদন্তে গঠিত উপ-কমিটির তিন সদস্য হলেন- চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজিবুর রহমান এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য পারভীন জামান। পরিদর্শনকালে পারভীন জামান অনুপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে এম এ লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পতেঙ্গা অংশ থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন অংশ দেখেছি। এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে দুই পাশের সীমানা দেয়ালে যে কলাম লাগানো হয়েছে, সেগুলো মানসম্মত মনে হয়নি। ‘ফিনিশিংয়ে’ কিছু সমস্যা আছে। দু-এক জায়গায় রড বেরিয়ে পড়েছে। অসঙ্গতিগুলো প্রকল্প পরিচালক ও কনসালটেন্টকে দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব। এক্সপ্রেসওয়ের মূল কাঠামোর কাজ শেষ হলেও র্যাম্পের কাজ এখনও না হওয়ায় যান চলাচলের জন্য খুলে দিলে সুফল পাওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তদন্তে তিন মাস সময় আছে। নির্মাণকাজে কোথাও কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা সব দেখে প্রতিবেদন জমা দেব। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন হওয়ার সময় তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’ করে আরও এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি এবং মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র্যাঙ্কিন যৌথভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে।
প্রকল্পটির নির্মাণকাজ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। পরে ১০ জুন এসব অভিযোগগুলো তদন্ত এবং নির্মাণকাজের গুণগতমান যাচাই বাছাইয়ে এই উপ-কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন