সরকারি জমি দখল করে ইউপি সদস্যের ঘর নির্মাণ
জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলাবস্থায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে। গত কয়েক দিন যাবৎ বস্তুল বাজারের ভূমি অফিসের সামনে বাঁশের চাটায়ের বেড়া দিয়ে গোপনীয়ভাবে ছুটির দিনে ও রাতের আঁধারে ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ীভাবে ঢালাইয়ের কাজ করলেও নিশ্চুপ রয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা। কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. সুমন হায়দারের যোগসাজশে এ দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এর আগেও অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাবেক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুস্তাগীর কবিরের সহযোগিতায় কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তবে কাউকে সরকারি জায়গায় ঘর নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার মো. খালিদ হাসান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, তাড়াশ উপজেলাধীন বারুহাস ইউনিয়নের বস্তুল গ্রামে এস এ দাগ ৭৫০/৭৫১, আর এস দাগ ১১৭৫/১১৭৬ তহশিল অফিস ও হাটের নামে রেকর্ডভূক্ত ভূমি। এ ভূমিতে উক্ত দাগগুলো নিয়ে সিরাজগঞ্জ আমলি আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। অথচ বিরাজমান জায়গাটি আব্দুল হান্নান মেম্বার কোন প্রকার লিজ ছাড়াই সরকারি সম্পত্তি ও হাটের জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এ যেন দখলদারিত্বের রামরাজত্ব চলছে। এ এলাকার হাটের সকল জায়গা ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে একের পর এক দখলে নিচ্ছেন প্রভাবশালীরা। এর আগেও ওই এলাকায় কয়েকটি জায়গা ভূমি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছেন এই বিতর্কিত ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান। তার এসব কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
তবে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজশে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বস্তুল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. সুমন হায়দার।
এ বিষয়ে বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আমাকে মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন এসিল্যান্ড স্যার। আর সকল নিয়ম মেনেই আমি ঘর নির্মাণ করছি।
সরকারি জায়গায় ঢালাই করে ঘর নির্মাণের বিধান রয়েছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।
তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খালিদ হাসান বলেন, সরকারি জায়গায় কাউকে আমি ঘর তোলার অনুমতি দিতে পারি না। তবে যদি কেউ লিজ নেয়, সেখানেও পাকা ঘর নির্মাণের বিধান নেই। আমার নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ ঘর নির্মাণ করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা বলেন, ঘর নির্মাণের বিষয়টি বেশ কয়েকদিন আগে আমি অবগত হয়েছি। তবে সরকারি জায়গায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ বিধিসম্মত নয়। যদি কেউ সরকারি জায়গায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে তাহলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন