ইঁদুরের গর্ত থেকে ১৯টি গোখরার বাচ্চা উদ্ধার
বগুড়ার শেরপুরে বাসাবাড়িতে করা ইঁদুরের গর্ত থেকে ১৯টি খৈয়া গোখরার বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে উপজেলার উত্তর সাহাপাড়াস্থ হরিজন পল্লীর হেলাল বাঁশফোরের বসতবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে সাপগুলো বস্তায় ভরে বনবিভাগের নিকট হস্তান্তর করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সদস্যরা। এরপর প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হেলাল বাঁশফোর নামের ব্যক্তির শয়নকক্ষে একটি ইঁদুরের গর্ত ছিল। সেই গর্ত থেকে বিষধর সাপের বাচ্চা বের হতে থাকে। একের পর এক ১৯টি সাপের বাচ্চা বের হয়। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দারা দেখার পর তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। একপর্যায়ে তারা সাপের বাচ্চাগুলো মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী বিষয়টি জানার পর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সদস্যদের বিষয়টি জানান। এরপর স্বেচ্ছাসেবী দল এসে সাপগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগের হাতে তুলে দেয়।
শেরপুরের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সোহাগ রায় ও সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, খৈয়া গোখরার প্রজননকাল এপ্রিল থেকে জুলাই মাস। এ সময় এই সাপ সাধারণত ইঁদুরের গর্তে অনধিক ৩০টি ডিম দিয়ে থাকে। এদের বিষ শক্তিশালী সিনাপটিক নিউরোটক্সিন ও কার্ডিওটক্সিন–সমৃদ্ধ। এই সাপের বাচ্চার জন্ম থেকেই কার্যকর বিষগ্রন্থি থাকে। দংশনের ১৫ থেকে ১২০ মিনিটের মধ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। দংশনের পর দ্রুত অ্যান্টিভেনম দেওয়া হলে রোগী সুস্থ হয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী সাপ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে সাপের একটু উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। তবে এখানে রাসেলস ভাইপার নেই। যেসব সাপ রয়েছে তার ৮০ শতাংশ সাপের কোনো বিষ নেই। তবে খৈয়া গোখরা সাপ বিষধর। কিন্তু এই সাপ কামড় দিলে রোগীকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিতে হবে। এখানে টিকা-অ্যান্টিভেনম দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সাপে কাটা রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে বিষধর সাপ উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, এলাকায় আরও অনেক বিষধর সাপ আছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
মন্তব্য করুন