৪ ঘণ্টায় রোগীর বিল ২১ হাজার, হাসপাতাল সিলগালা
কুমিল্লায় রোগীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইউনাউটেড হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা নগরীর টমসন ব্রিজ সড়কের পাশে অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতালে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় হাসপাতালের নানান অনিয়মের কারণে হাসপাতালটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহমেদ মঞ্জুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাইয়ুমসহ একটি টিম নিয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভুক্তভোগী রোগী আতর আলী (৭০) লাকসামের উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগীর ছেলে আবুল কাশেমের অভিযোগ, রোববার ভোরে আতর আলীর বুক ব্যাথা হলে তার পরিবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে তাকে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসকের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় এক দালাল এসে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে কিছু পরীক্ষা করে। পরীক্ষা করার পর চিকিৎসক আসবে বলে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের হাসপাতালে বসিয়ে রাখে। একপর্যায়ে রোগীর অবস্থা আরও অবনতি হলে স্বজনরা রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে ২১ হাজার টাকার বিল হাতে ধরিয়ে দেয়। এতো টাকা বিল কীভাবে আসছে, জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাদের আটকিয়ে রাখে।
পরে রোগীর স্বজনরা এ বিষয়ে কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে একটি দল এসে হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে বের হয়ে আসে হাসপাতালটির নানা অনিয়ম।
অভিযানে দেখা গেছে, ২০১৬-১৭ সালে হাসপাতালটির কোনো লাইসেন্স হালনাগাদ করা হয়নি। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিএমডিসির রেজিষ্ট্রেশন নেই। হাসপাতালটিতে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে অধিক মূল্যে পরীক্ষা করানো হতো। সেবার নামে রোগীদের কাছ থেকে অধিক টাকা বিল করে নিয়ে যেতো। তাছাড়া হাসপাতালের ভেতরে ওটি ও কেবিনগুলো অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পাওয়া যায়।
অভিযান শেষে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহমেদ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালটির বিরুদ্ধে একজন রোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশনে আওতাভুক্ত ছিল না, হাসপাতালটির লাইসেন্স হালনাগাদ ছিল না। তাছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষার মূল্য তালিকা সরকারের নির্ধারিত তালিকা থেকে অনেক বেশি লেখা হতো। এ ছাড়াও হাসপাতালে নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে। এসব কারণে আমরা হাসপাতালটিকে বন্ধ করে দিয়েছি।’
মন্তব্য করুন