• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

‘রাজাকার’ স্লোগানে উত্তপ্ত জাবি, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের জিজ্ঞাসাবাদ

জাবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:২১
‘রাজাকার’ স্লোগানে উত্তপ্ত জাবি, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের জিজ্ঞাসাবাদ
ছবি : আরটিভি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানের জেরে দুই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন চেক করার অভিযোগে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনা জানাজানি হলে গভীর রাতে মিছিল নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে’ এমন খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে অবস্থান নেন।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘তুমি কে, আমি কে? রাজাকার রাজাকার’; ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারও বাপের না’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারও বাপের না’, ‘আমার ভাই আটক কেন? জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

রবীন্দ্রনাথ হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের হলেও এমন স্লোগান দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এমন সময় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মো. সাঈফ খান ৪৯ ব্যাচের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে একটি ম্যাসেজ দেন। নিচ তলার ১২৪ নং কক্ষ থেকে স্লোগান পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে শুরু করলে পলিটিক্যাল ব্লক থেকে ৪৮ ব্যাচের সিনিয়ররা এসে তাদের সবাইকে ডেকে ডাইনিংয়ে আসতে বলে। ১২৪ নং কক্ষ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কাউসার আলম আরমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আশিক ও ইংরেজি বিভাগের জাহিদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ সময় ডাইনিং হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডাইনিং হলে ডেকে আনার পর শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। এ সময় ‘শিবির’ সন্দেহে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে ম্যাসেজ চেক করা হয়। দীর্ঘসময় পর্যন্ত ডাইনিং হল থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পান হলের শিক্ষার্থীরা। পরে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে তাদের স্লোগানের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়।ছাত্রলীগের নেতারা এ সময় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদারকে সেখানে নিয়ে আসেন। হল প্রভোস্টের উপস্থিতিতে ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ক্ষমা চান। এরপর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাদের কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তারা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ১১টায় আমরা খবর পাই আমাদের কয়েকজন আন্দোলনকারী সহযোদ্ধাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা খবর পেয়ে সহকর্মীদের উদ্ধার করতে এসেছি। কোটা আন্দোলন সারাদেশের শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। এ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কেউ যদি নির্যাতনের শিকার হয় তা শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।

এসব ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘হলের সামনে শিক্ষার্থীদের মিছিলের কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ আগে হলে এসেছি৷ তবে ঘটনা বিস্তারিত বুঝতে পারিনি। সম্ভবত কোনো স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি।’

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাবিতে শহীদদের স্মরণে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও স্মরণসভা 
জাবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান
জাবিতে বন্যার্তদের সহায়তায় ‘বটতলা বিতর্ক’
হার্ভার্ডে ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট হিসেবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন জাবি অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম