• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

ছাত্রলীগ ছাড়ছেন রংপুরের একের পর এক নেতাকর্মী

আরটিভি নিউজ

  ১৮ জুলাই ২০২৪, ১১:০৯
ছাত্রলীগ ছাড়ছেন রংপুরের একের পর এক নেতাকর্মী
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসছেন রংপুরের একের পর এক নেতাকর্মী। বিশেষ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্র আবু সাইদের মৃত্যুর ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টির পর থেকে ঘটনাটিকে ‘নৃশংস’ উল্লেখ করে পদত্যাগ করা শুরু করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল থেকে বুধবার (১৭ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্নজনের পদত্যাগের খবর পাওয়া যায়। বেরোবি শাখা ছাত্রলীগ ছাড়াও বিভিন্ন শাখা থেকেও অনেকে পদত্যাগ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, ইতোমধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পদত্যাগ করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে রয়েছেন বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তারিকুর রহমান মুবিন, ফজলে রাব্বি, যুগ্ম সম্পাদক পিয়াস, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আরিফ, উপ-তথ্য গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ, সহসম্পাদক মাথিন লোহানী ও সম্পাদক মো. আল-আমিন মিয়া, উপ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক আলমগীর সরকার, উপধর্মবিষয়ক সম্পাদক রাজন আহমেদ, উপপাঠাগার সম্পাদক শাহিন ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ ঋয়ানসহ অনেকে।

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বেরোবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আরিফ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, আজকের ঘটনা আমার আদর্শ বহির্ভূত, তাই আমি সব ধরনের রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।

সহসভাপতি ফজলে রাব্বি লেখেন, ‘আমি এক কুলাঙ্গার, ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।’

পিয়াস লেখেন, ‘আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’

সহসম্পাদক মো. আল আমিন মিয়া লেখেন, ‘আমি মো. আল আমিন মিয়া। আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সম্পাদক পদে আছি। আমি আমার বিবেকের কাছে লজ্জিত হয়ে আমার ছাত্রলীগের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম। এখন থেকে ক্যাম্পাসের কোনো রাজনীতির সঙ্গে আমি আর যুক্ত নই।’

সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিম নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপে একজন ছাত্রলীগ কর্মী লিখেন, একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে এইটা কখনোই মানতে পারব না। সবার চোখে সামনে আমাদের ছোট ভাইয়ের বুকে গুলি করলো, সে মারাও গেল, অথচ আমরা চুপ।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বাইরেও অনেক নেতাকর্মী পদত্যাগ করে নিশ্চিত করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রংপুর আইএইচটি (১৮-১৯) ব্যাচের ফারজানা আক্তার নওরিন আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন আলপনা আক্তার রিতু। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহ সবাইকে হেফাজত কর। আর যেন কোনো মায়ের কোল খালি না হয়, এসব আর সহ্য হচ্ছে না। আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নই, কিন্তু বঙ্গবন্ধু যদি আমাদের জাতির পিতা হয়ে থাকে তাহলে তো আমরা সবাই তার সন্তান তাহলে কেন সেখানে কোটার বৈষম্য থাকবে? কোটা সংস্কার করা হোক।’

গত দুইদিনে এমন শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পদত্যাগের খবর পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠন থেকেও পদত্যাগ করেছেন কয়েকজন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বেরোবি ক্যাম্পাসের সামনে পার্ক মোড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় সংঘর্ষের সম্মুখে থাকা আবু সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। তিনি বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।

এদিকে বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে নিহত আবু সাঈদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা শেষে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে ছাত্রলীগমুক্ত ঘোষণা করে পোস্টার সাঁটিয়ে দেন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ ও প্রক্টর শরিফুল ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করে তাঁদের পদত্যাগের দাবি তুলে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজশাহীতে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত  
এবি পার্টি ছাড়লেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক
সিংড়ায় অবৈধভাবে মাছ শিকার, বিএনপির ৮ নেতাকর্মীর নামে মামলা
সাইবার মামলা থেকে খালাস পেলেন বিএনপি নেতা বুলুসহ ১২ নেতাকর্মী