• ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১
logo

কোটা সংস্কার আন্দোলন: কুড়িগ্রামে লাশ হয়ে ফিরেছেন ৩ জন

স্টাফ রিপোর্টার (কুড়িগ্রাম), আরটিভি নিউজ

  ২৮ জুলাই ২০২৪, ২৩:৫৫
কোটা সংস্কার আন্দোলন: কুড়িগ্রামে লাশ হয়ে ফিরেছেন ৩ জন
ছবি : সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিকার কুড়িগ্রাম জেলার তিন যুবক। ঢাকায় আন্দোলনের সংঘর্ষের সময় গুলিতে প্রাণ হারান তারা। মৃতদের পারিবারিক তথ্যমতে তারা কেউ আন্দোলনের সঙ্গে বা কোনো রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। তারপরেও তাদের পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।

মৃতরা হলেন উলিপুর উপজেলার ব্যাংক কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম (৩৫), কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার রাজমিস্ত্রী নুর ইসলাম (২২) এবং নাগেশ্বরী উপজেলার রাজমিস্ত্রী গোলাম রব্বানী (২০)। এখন পর্যন্ত এই তিন পরিবারকে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেউ কোন প্রকার সহায়তা করেনি বলে জানা গেছে।

রায়হানুল ইসলাম (ব্যাংক কর্মকর্তা)

জেলার উলিপুর উপজেলার পৌর শহরের মুন্সিপাড়ার আব্দুর রশিদের একমাত্র সন্তান রায়হানুল ইসলাম। বাবা আব্দুর রশিদ জানান, রায়হানুল ছোটবেলা থেকে মেধাবী ছাত্র ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষে চাকুরি হয় একটি বেসরকারি ব্যাংকে। সেখানে সহকারি ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতো।

তার বাবা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে আরো বলেন, গত শুত্রুবার ১৯ জুলাই বাড্ডা এলাকায় জুম্মার নামাজ শেষে রাস্তায় নামলে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী আর পুলিশের সংঘর্ষেও মাঝে পড়েন। এরই এক সময় একটি গুলি তার ডান চোখের কাছেলেগে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরদিন তার লাশ এনে উলিপুর এমএস স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে নামাজের জানাজা শেষে উলিপুর কেন্দ্রীয় কবর স্থানে দাফন করা হয়।

নুর আলম (রাজমিস্ত্রী)

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভাগিরভিটা গ্রামের আমির হোসেনের দুই পুত্রের মধ্যে নুর আলম বড়। বাবা আমির হোসেন ভ্যান চালক। আর মা নুর বানু গার্মেন্টস কর্মী। আর নুর আলম ছিলো রাজমিস্ত্রী। আর সবার ছোট নুর জামাল (১৪) থাকতো অন্যের দোকানের কর্মচারী হিসাবে। আর নুর আলম প্রায় এক বছর আগে বিয়ে করেন। স্ত্রী খাদিজা অন্তসত্বা সে থাকতো বাসায়। আর সবাই কর্মজীবী। সবমিলিয়ে ছিলো সুখের সংসার। পরিবারের সবাই মিলে ভাড়া থাকতেন গাজিপুর চৌরাস্তার তেলিপাড়া এলাকায়।

বাবা আমির হোসেন প্রত্যক্ষদর্শী আশিক ও আব্দুল্লাহর বরাতে জানান, শনিবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঠিকাদারের সাইডের কাজ থেকে ফেরার পথে চৌরাস্তা এলাকায় গোলাগুলিতে পড়েন। এক পর্যায়ে ডান চোখে গুলি লাগলে ঘটনাস্থলে লুটে পড়েন। পরে অন্যান্যরা ধরাধরি করে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবিদ বিল্লাহ তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এরপর তারা লাশ নিয়ে যায় জয়দেবপুর সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে রাত ১০টায় লাশ হস্তান্তর করলে পরদিন রোববার (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়িতে লাশ নিয়ে আসি। সকাল সাড়ে ১০টায় নামাজের জানাজা শেষে বাড়ির আঙ্গিনায় দাফন করা হয়।

গোলাম রব্বানী (রাজমিস্ত্রী)

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিজিবির গুলিতে ঢাকার আফতাবনগরে মারা যায় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের কচাকাটা বাজার এলাকার সাইদুর রহমানের পুত্র গোলাম রব্বানী (২০)। নিহত গোলাম রব্বানীর সহকর্মী একই এলাকার বাসিন্দা রাসেল ইসলাম (২২) জানান, তারা রামপুরা আফতাবনগরে থাকতেন। রাজমিস্ত্রি কাজ করতেন। গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় আফতাবনগরে ই-ব্লকে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন তারা। এ সময় রাতের খাবার খেতে পাশের খাবারের দোকানে যাওয়ার পথে আকস্মিক বিজিবির ছোড়া গুলিতে পেটের নিচে গুলি লেগে আহত হন গোলাম রব্বানী। তাকে দ্রুত পাশের একটি হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দেন। পরে সেখান থেকে শ্যামলির একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ কুড়িগ্রাম নিয়ে আসে রাসেল ইসলাম।গত শনিবার (২০ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহ নিয়ে আসা হয় নাগেশ্বরীতে। রোববার (২১ জুলাই) সকাল ৯টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘আমার মৃত্যুর জন্য জাহেদা দায়ী, জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার’
কুড়িগ্রামে ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের শীতবস্ত্র বিতরণ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাই
নাগেশ্বরীতে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার