‘বাবা হয়ে সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়ার কষ্ট বলে বোঝাতে পারব না’
‘বাবা হয়ে সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়ার কষ্ট কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। ছেলেকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। ঘাতকরা সব স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে।’
বুধবার (৩১ জুলাই) কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় গুলিতে নিহত ইকরাম হোসেন কাউছারের বাবা মাওলানা আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল? কেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো? এতটাই অপরাধ করলে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেত তারা। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। নিশ্চয়ই তিনি সঠিক বিচার করবেন।’
ইকরামের মা রুমি আক্তার আহাজারি করে বলেন, ‘ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়ে একদিন বড় কর্মকর্তা হবে এমন স্বপ্ন ছিল। চোখের পলকেই সব স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে তারা। কার কাছে বিচার চাইব, কাকে বলব এসব কথা। আমার ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না।’
নিহতের ছোট ভাই ফারুক হোসেন বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়া কলেজ সংলগ্ন লক্ষ্মীবাজার এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন। পরে এক ভ্যানচালক উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ভ্যানচালকই বাবাকে ফোনকলে মৃত্যুর কথা জানান। পরেরদিন রাত ৯টার দিকে গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে ভাইয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
জানা গেছে, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের রাজষপুর পাগলিরকুল এলাকার ইকরাম হোসেন কাউছার ঢাকার কবি নজরুল কলেজে অর্থনীতি বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত ছিলেন। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর কবি নজরুল কলেজ সংলগ্ন লক্ষ্মীবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি কাউছার। ওই দিন জুমার নামাজের পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। গত ২০ জুলাই রাতে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন