• ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১
logo

গুলিবিদ্ধ আবুজর বলেছিলেন, কষ্ট করে হলেও আমাকে বাঁচাও মা

আরটিভি নিউজ

  ০১ আগস্ট ২০২৪, ২৩:৫৬
সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শুক্রবার (১৯ জুলাই) বসুন্ধরা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলাকালে পেটে গুলিবিদ্ধ হন আবুজর (২৩)। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার দুইবার অপারেশন করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে মেট্রোপলিটন সেন্ট্রাল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৭ জুলাই) মারা যান তিনি।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শ্যামপুর এলাকার মৃত তাঁরা মিয়ার ছেলে আবুজর ইসলাম। রোববার (২৮ জুলাই) নিজ এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয় তার।

এদিকে আবুজরের মা সুফিয়া বেগম বলেন, ৬ বছর বয়সে বাবাকে হারান আবুজর। ৩ ছেলেকে সংসারে রেখে যাওয়ায় অনেক কষ্ট করে তাদের বড় করেছিলাম। আবুজর ছিল সবার ছোট। দুই ছেলে বিয়ে করে যার যার মতো আলাদা থাকে। আমার কোনো খোঁজ খবর নেয় না। একমাত্র আবুজর আমাকে একমাত্র দেখাশোনা করতো। সংসারের সব খরচ দিতো। মায়ের প্রতি ভালোবাসা অনেক বেশি ছিল বলেও কখনো বিয়ের কথা বলতে পারিনি। ঢাকা শহরে বসুন্ধরা এলাকায় এক বাসার মালিকের গাড়ি চালাতো। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার কাছে খবর আসে আবুজরের পেটে গুলি লাগছে। এ খবরে যেন আমার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। আমি যখন ছেলের সামনে গেছি জড়িয়ে ধরে বার বার কইছে মা আমাকে কষ্ট করে হইলেও চিকিৎসা করো, ভালো হয়ে সব টাকা দিয়ে দিমু। ছেলের জন্য ঋণ করে টাকা পয়সা মিল করে চিকিৎসা করলাম। তাওতো আমার বাবারে বাঁচাতেই পারলাম না। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আমাকে ছেলে বলেছিলেন ‘কষ্ট করে হলেও আমাকে বাঁচাও’।

আবুজরের বড় ভাই শাহিদুল বলেন, ভাইকে বাঁচানোর জন্য কত কষ্ট করলাম, তবুও শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারলাম না। বাড়ি করার জন্য ইট কিনেছিলাম, সেইটাও বিক্রি করে দিয়েছি। এলাকার বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা ধার করে ভাইকে চিকিৎসা করেছি। এভার কেয়ার হাসপাতালে বিল দিয়েছি সাড়ে ১১ লাখ টাকা এবং মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ২ লাখ ৯ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন কীভাবে এত টাকা দিমু।

মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী দিদার পাশা বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া আবুজরের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়েছি। তার পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার প্রয়োজন। আমি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আবু সাঈদ হত্যা: হঠাৎ আলোচনায় বেরোবি শিক্ষকের ফেসবুক পোস্ট
ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি, তালিকায় যে ৯২ পুলিশ কর্মকর্তা
রিকশার পাদানিতে গুলিবিদ্ধ নাফিজের মরদেহ, মামলা করলেন বাবা
আন্দোলন নিয়ে লেখা হায়দার হোসেনের গান যে কারণে প্রকাশ পায়নি