ফুচকা খাওয়ার টাকায় বাঁশি কিনে ট্রাফিকের দায়িত্বে ৭ বছরের শিশু
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই নেই ট্রাফিক পুলিশ। এ অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে সারাদেশের মতো বাগেরহাটেও নিরলসভাবে কাজ করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে নজর কেড়েছে ৭ বছরের শিশু আরাফ মাহিনের প্রচেষ্টা।
বাগেরহাট পুলিশ লাইনস স্কুলের প্রথম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী ফুচকা খাওয়ার কথা বলে মায়ের কাছ থেকে ৩০ টাকা নেয়। এরপর সেই টাকায় একটি বাঁশি কিনে দুদিন ধরে সড়কে পালন করছে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব।
সরেজমিনে শহরের পুরাতন পুলিশ লাইন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায়, মুখে বাঁশি নিয়ে রিকশা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকচালকদের সুশৃঙ্খলভাবে সড়কে চলাচলের আহ্বান করছে আরাফ। পাশাপাশি হাতে থাকা দিকনির্দেশক লাঠি দিয়ে যানবাহনগুলোকে সারিবদ্ধভাবে যাওয়ারও নির্দেশনা দিচ্ছে। আর সড়কের চলাচলরত যানবাহনগুলো তার নির্দেশ পালন করছে।
সন্তানের এমন কর্মকাণ্ডে আপ্লুত মা লাইলি আঞ্জুমান। তিনি বলেন, আরাফের উদ্যোগে আমি খুব খুশি হয়েছি। ফুচকা খাওয়ার জন্য ৩০ টাকা নিয়েছিল। পরে জানলাম সে বাঁশি কিনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। ওকে যখন নিতে আসছি তখন আমাকে বলে, আম্মু আমাকে একটা ঘণ্টা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দাও, চার ঘণ্টা বই পড়বো। ওর কথার পরে আর বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করিনি। বুধবার থেকে ও কাজ করছে, আমি দূর থেকে ওর সঙ্গে আছি। আরাফকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
কথা হয় ‘খুদে ট্রাফিক’ আরাফের সঙ্গে। সে বলে, এই জায়গায় সবসময় পুলিশ আঙ্কেলরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু কয়েক দিন পুলিশরা দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই মাঝে মাঝেই বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। এজন্য শৃঙ্খলা ফেরাতে আমি নিজে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। অটো ও রিকশাচালক আঙ্কেলরাও আমার কথা শুনছে, খুবই ভালো লাগছে।
এ ছাড়া বড় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সড়কের ময়লা পরিষ্কার করতেও দেখা যায় শিশু আরাফকে।
প্রসঙ্গত, শিশু আরাফ বাগেরহাট শহরের সরুই এলাকার ইমরুল হাসানের ছেলে ও পুলিশ লাইনস স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মন্তব্য করুন