অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: প্রিন্স
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, শেখ হাসিনার পতন ছাত্র-জনতার বিজয়ের প্রথম অর্জন। এখন প্রশাসনের ভেতরে থাকা আওয়ামী লীগের জঞ্জাল পরিষ্কার করে প্রশাসনকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। ছাত্র-জনতার বিজয় ধরে রাখতে হলে রাজনৈতিক দলের সরকারে আসতে হবে। তাই আগামী তিন মাসের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখতে হবে ছাত্র-জনতার বিপ্লব জনগণের চোখ খুলে দিয়েছে। ভালো কিছু ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
রোববার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মিলনায়তনে বিএনপির বিভাগীয় যৌথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শেখ হাসিনা দেশে আসুক, তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তার অহংকারের কারণে দেশের আজ এই অবস্থা।
এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতা প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হিন্দুদের মিছিলে ঢুকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। সীমান্তে লাখ লাখ হিন্দু ভারতে যেতে অবস্থান নিয়েছে বলে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকবে হবে। অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। তাই পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তাদের শেল্টার দেওয়া যাবে না। তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতে যে রূপরেখা তৈরি করেছেন, তা জনগণ গ্রহণ করেছে।
এ সময় ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে প্রিন্স বলেন, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, নারী-শিশু, কৃষকসহ সবাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। অথচ পতনের দুদিন আগে শেখ হাসিনা বলেছিল, শেখের বেটি পালিয়ে যায় না। শেখ হাসিনা খুনি, তার শরীরে রক্তের দাগ। দিনের ভোট রাতে করে, ডামি নির্বাচন করে উন্নয়নের নামে লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে। উপমহাদেশে তার মতো স্বৈরাচার আর নেই। সে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর নির্মমভাবে গুলি করে গণহত্যা চালিয়েছে। হেলিকাপ্টার থেকে গুলি করেছে। শেখ হাসিনা ছাড়া এর আগে কোনো সরকার প্রধান পালিয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, সারাদেশে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড করছে। বিএনপি কোনো ধংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নিপীড়ন করেছে। কিন্তু বিএনপি এসব প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করে না। বিএনপির নাম করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট যারা গণভবনে গিয়েছিল, তারা কেউ বিএনপির নেতাকর্মী না। সাধারণ মানুষ ক্ষোভের কারণে এসব হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় কি হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে তা হতে দেওয়া হয়নি।
সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের কঠিন নির্দেশনা দিয়েছেন। বিগত আন্দোলন সংগ্রাম হিসাব করে মূল্যায়ন করা হবে। তিনি (তারেক রহমান) নির্দেশ দিয়েছেন, আপাতত ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কোন যোগদান হবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এ সময় বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান লিটন, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, আলমগীর মাহমুদ আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
মন্তব্য করুন