সন্দ্বীপে সাগর থেকে জেলেদের জাল লুট
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ঘেঁষা সাগরে জেলেদের জাল লুটের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের জলদাস পাড়ার ২৯ জেলে পরিবার এদিন জাল ফেলেছিল সাগরে। চিহ্নিত অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা হঠাৎ হানা দিয়ে ২২ পরিবারের প্রায় ১১ লাখ টাকার জাল লুট করে নিয়ে যায়।
সোমবার (১৯ আগস্ট) এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন লুটের শিকার জেলেরা। নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে জেলেরা জাল ফেরত পাওয়া ও লুটের প্রতিকার চেয়েছেন। অভিযোগ করেছেন নৌবাহিনীর কাছেও।
অভিযোগে বাদী শ্রীকৃষ্ণ জলদাস ৫ জনের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে তাদের চিহ্নিত জলদস্যু বলে উল্লেখ করেছেন।
শ্রীকৃষ্ণ জলদাস জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর ১টার সময় তাদের চোখের সামনেই সাগর থেকে জাল তুলে নিচ্ছিল জলদস্যুরা। তিনিসহ অন্য জেলেরা চিৎকার চেঁচামেচি করলেও জলদস্যুদের কাছে নানা রকমের অস্ত্রশস্ত্র থাকায় তারা জাল লুট করা ঠেকাতে পারেননি। দূর থেকে নানা ধরণের অস্ত্র উঁচিয়ে জলদস্যুরা তাদের গালাগাল করে ভয় দেখাতে থাকে।
শ্রীকৃষ্ণ জলদাস অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করেছেন তারা হলেন ইসলাম সেরাং, কাইয়ুম সেরাং, মো. সুজন, মিলাদ সেরাং, মঞ্জুর সেরাং ও সবুজ সেরাং (সাগরে ছোট বোটের চালকদের স্থানীয়ভাবে সেরাং বলা হয়)। তাদের সবার বাড়ি পাশের ইউনিয়ন সারিকাইতের ১ নং ওয়ার্ডের গাছতলী ঘাট এলাকায়। এছাড়া অজ্ঞাত আরও দশ পনের জনের কথা উল্লেখ করেছেন।
কয়েক বছর ধরেই ইলিশের মৌসুমে জেলেদের শারীরিক হেনস্থা ও হুমকি ধামকির মাধ্যমে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার অভিযোগে। ইতোপূর্বে একাধিকবার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে সামাজিক বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ কিন্তু তাতে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় তারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
দুর্জয় জলদাস নামের একজন ভুক্তভোগী জেলে বলেন, লুট হওয়া জাল ও কাছি (মোটা রশি) ফেরত না পেলে তারা পথে বসবেন। সাগরে জাল ফেলেই তাঁদের সংসার চালাতে হয়। এখন ভরা ইলিশের মৌসুমে সাগরে জাল ফেলতে না পারলে সংসার চালানোর বিকল্প ব্যবস্থা নেই তাদের। দুর্জয় জানিয়েছেন সোমবার বিকেলে তারা নৌবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়ে এসেছেন।
নৌবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার অভিযুক্তরা সাড়া না দিলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইসলাম সেরাংয়ের মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সরেজমিনে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচায় করবে এবং পরবর্তীতে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সন্দ্বীপের নির্বাহী কর্মকর্তা জেলেদের অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা বলেন, নৌবাহিনী আজ উভয় পক্ষকে উপস্থিত থাকতে বলেছে। অভিযুক্তরা উপস্থিত না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন