স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন, প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ায় পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী জেসমিন আকতারের (৫২) যাবজ্জীবন ও প্রেমিক মোজাফফর হোসেনকে (৬০) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাসিমুল হক হলি বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর শহরের বৃন্দাবনপাড়া থেকে জামাল উদ্দিন খাজার (৫৮) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বৃন্দাবনপাড়ার মৃত আমির হোসেন খলিফার ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোজাফফর হোসেন নিহতের আপন ভগ্নিপতি।
নাসিমুল হক হলি আরও বলেন, মোজাফফর শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট এলাকার মৃত অছিমুদ্দীনের ছেলে। গ্রেপ্তার মোজাফফর হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দিতে জানান, নিহতের স্ত্রী জেসমিন আকতারের সঙ্গে তার পরকীয়া ছিল। তাকে (জেসমিন আকতার) বিয়ে করার উদ্দেশ্যে দুজনে পরিকল্পনা করে জামাল উদ্দিন খাজাকে হত্যা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই বছরের ২৫ নভেম্বর জামাল উদ্দিন খাজার বোন আম্বিয়া মারা গেলে তিনি স্ত্রী ও সন্তানসহ শাজাহানপুর উপজেলার ফুলদিঘী গ্রামে জানাজায় অংশ নিতে যান। পরিবারের লোকজনসহ মোজাফফরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ফুলদিঘী থেকে জামাল উদ্দিন খাজার স্ত্রী ছেলে জেমস রিমনকে সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়ি সদর উপজেলার চাঁদমুহ্ হরিপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিতে যান।
জামাল উদ্দিন খাজা সন্ধ্যার পর বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার নিজ বাড়িতে যান। সেই সুযোগে রাতে মোজাফফরও বৃন্দাবনপাড়ায় যান। স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ঘরের মধ্যে থাকা লোহার শাবল দিয়ে জামাল উদ্দিন খাজার মাথায় আঘাত করেন মোজাফফর। পরে লাশ কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যান।
পরদিন সকালে জামাল উদ্দিনের ছেলে জেমস রিমন বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দেয়াল টপকে বাড়িতে প্রবেশ করে তার বাবার লাশ দেখতে পান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জেমস রিমন বাদী হয়ে মোজাফফর হোসেন এবং তার মা জেসমিন আকতারের নামে থানা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে দুজনের নামে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে। এরপর শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন