গাজীপুরে শেখ হাসিনা, কাদেরসহ ১৫৫ জনের নামে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২০ জুলাই নজরুল ইসলামকে (৩২) হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫৫ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা বেগম (২২) বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানায় মামলাটি করেছেন।
নিহত নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বারইভাগ এলাকার মো. জামাল শেখের ছেলে। তিনি স্ত্রীসহ গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় শাহাবুদ্দিন মণ্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক মহিলাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও সিমিন হোসেন রিমি, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি, সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান, পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মণ্ডল, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, আসাদুর রহমান কিরণ, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনাসহ প্রথম ১৬ জনকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদানের জন্য গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে বাসন থানার চান্দনা এলাকায় পশমি সোয়েটার গার্মেন্টের সামনে পাকা রাস্তায় সমাবেশে অংশ নেন। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে মামলার ১ থেকে ১৬ নম্বর আসামির নির্দেশে অন্যরা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, রড, রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে আফজাল হোসেন সরকার রিপন ও কামরুল আহসান সরকার রাসেলের উপস্থিতিতে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় নজরুল ইসলাম পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বাদী এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, পরে স্বামীর লাশ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বারইবাগ গ্রামে দাফন করেন। স্বামীর মৃত্যুতে তার পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে বিপর্যস্তসহ দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ শেষে মামলা করতে দেরি হয়।
মন্তব্য করুন