চাঁদপুরের তিন উপজেলায় জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ এবং শাহারাস্তি উপজেলায় জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক এলাকা হাঁটু পানিতে ডুবে আছে। শাহারাস্তির দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে কুমিল্লা ও নোয়াখালীর বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় প্লাবিত হয়েছিল নিচু এলাকা। চাঁদপুরে ৬৪টি ইউনিয়নের ৫৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১১ হাজার পুকুর এবং ৫৫টি ঘেরের খামারিদের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার পোনা মাছ নষ্ট হয়েছে। তবে স্বস্তির বিষয় চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনায় পানি এখনো বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা ভারী বৃষ্টিতে সেচপ্রকল্প এবং নিচু এলাকার জলাবদ্ধতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও নিচু এলাকার বসতবাড়ি, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, মাছের খামার, আর গ্রামের পাকা ও আধাপাকা সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তালিকা তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন। এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। বুধবার আবারও বৃষ্টিপাত শুরু হওয়া পানি আবারও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. শাফায়েত সিদ্দিকী জানান, ৩২ হাজার হেক্টর জমির আংশিক এবং ১৮ হাজার ৭৫৩ হেক্টর জমির ধানের চারা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সাড়ে ৪৫ হাজার কৃষকের পৌনে ৭৯ কোটি টাকা পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, প্রায় ১১ হাজার পুকুর এবং ৫৫টি ঘেরের খামারিদের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার পোনা মাছ নষ্ট হয়েছে।
চাঁদপুর সেচপ্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) রুহুল আমিন জানান, ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ভেতর যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে তা আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নিরসন করা সম্ভব হবে। মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচপ্রকল্প বেড়িবাঁধের কিছু কিছু এলাকায় ধস নেমেছে। সেসব জায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন।
চাঁদপুর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা হেদায়েত উল্লাহ জানান, চাঁদপুরে ৬৪টি ইউনিয়নের ৫৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মানুষের জন্য এরইমধ্যে ৭০০ মেট্রিক টনের বেশি চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকায় যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তালিকা করে তাদেরকেও সহায়তা দেয়া হবে।
এদিকে সরকারী ভাবে ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে দুর্ভোগে পড়া অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে যাচ্ছেন বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন, রেডক্রিসেন্ট, ইসলামী আন্দোলন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
মন্তব্য করুন