শ্রীপুরে শেখ হাসিনাকে আসামি করে আরও ২ মামলা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪ , ০৫:৪৬ পিএম


শ্রীপুরে শেখ হাসিনাকে আসামি করে আরও ২ মামলা
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে গুলিতে ছয় জন নিহতের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। নিহত জাকির হোসেন রানা (৩৫) ও রহমত মিয়ার (২০) পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৮ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় ওই দুটি মামলা করা হয়। শ্রীপুর থানার ওসি কে এম সোহেল রানা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন- শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন রানা (৩৫) ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মঞ্জু মিয়ার ছেলে রহমত মিয়া (২০)। দুটি এজাহারে ঘটনার তারিখ ও স্থান একই উল্লেখ করলেও সময় ও হত্যার বর্ণনায় পার্থক্য রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ্ আল মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশিদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী জামাল উদ্দিন উল্লেখিত আসামিরাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ ৩৫ জনসহ অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করেছেন।

অপর মামলায় বাদী মঞ্জু মিয়া এজাহারে উল্লেখিত আসামিরাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি, সাবেক এমপি ইকবাল হোসেন সবুজ, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়সহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

উভয় মামলায় বাদী তাদের এজাহারে উল্লেখ করেন, শ্রীপুরে (৫ আগস্ট) ময়মনসিংহের থেকে বিজিবির সদস্যরা ঢাকা যাচ্ছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ (পল্লী বিদ্যুৎ) এলাকায় পৌঁছলে সেখানে আন্দোলন চলছিল। এসময় তারা বিজিবির গাড়ি আটক করে। খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিজিবি সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ছিনিয়ে নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ওই দুজন নিহত হন।

বিজ্ঞাপন

জামাল উদ্দিন তার এজাহারে উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৪টায় মামলার প্রথম থেকে ১২ নম্বর আসামির নির্দেশে এবং ১৩ থেকে ৩৭ নম্বর পর্যন্ত আসামিরা বিজিবি সদস্যদের নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গুলি চালান। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে জাকির হোসেন বুকে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে মাওনা আল হেরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ওই হাসপাতালের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপর মামলায় মঞ্জু মিয়া তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার ছেলে রহমত মিয়া জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার এসএম নিটওয়্যারস লিমিটেডে সুইং অপারেটর পদে চাকরি করতেন। প্রথম থেকে ১৬ নম্বর আসামিদের নির্দেশে এবং ১৭ থেকে ৬০ পর্যন্ত আসামিসহ অজ্ঞাত আসামিরা বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে থাকা অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় ২৬ নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা হারুন-অর রশিদ এবং ৪৪ নম্বর আসামি রাসেল শেখের হাতে থাকা বিদেশি অস্ত্রের গুলি রহমত মিয়ার বুকে বিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে রহমত মিয়াকে উদ্ধার করে মাওনা আল হেরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উভয় বাদী তাদের এজাহারে উল্লেখ করেন, লাশ দাফন করার পর দেশব্যাপী চলমান অস্থিরতায় থানার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সুষ্ঠু, সঠিক ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিবাদীদের ঠিকানা সংগ্রহ করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় অভিযোগ করতে বিলম্ব হয়েছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission