• ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১
logo

খালাতো ভাই পরিচয়ে হত্যা মামলা, তবে বাদীকে চেনেন না নিহতের বাবা!

আরটিভি নিউজ

  ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৮

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় গুলিতে নিহত হন ফরিদপুর সদর উপজেলার মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী (২৯)। এ ঘটনায় ২৯ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে হাসিবুল হাসান লাবলু নামে ফরিদপুরের সালথার খলিশাডুবি গ্রামের এক বাসিন্দা একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি নিজেকে নিহত সিরাজুলের খালাতো ভাই দাবি করলেও স্বজনেরা তাকে চেনেন না।

নিহত সিরাজুল বেপারি ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের তায়জদ্দিন মুন্সীর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে।

ঘটনা ঢাকার হলেও মামলায় ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগ করার অনুরোধও করেছেন বাদী। আসামিরা কেউ কেউ চাঁদাবাজির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হাসিবুল হাসানকে আমি চিনি না। এই নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই।’

আদালতের নির্দেশে ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি রেকর্ড করেন বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম। মামলায় ১২০ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক মৎস্যমন্ত্রী আবদুর রহমান ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর, ফরিদপুর-৪ আসনের মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র অমিতাভ বোস, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের সাবেক পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি কাজী আবদুস সোবাহান, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব সত্যজিৎ মুখার্জিসহ ফরিদপুরের ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুর সদরের ২৩, নগরকান্দার ২৪, সালথার ৯, বোয়ালমারীর ২ ও আলফাডাঙ্গার ১ জন আছেন। তাঁদের কারও কারও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছেন বাদী।

সিদ্দিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ৫ আগস্ট ফরিদপুরে ছিলাম। কিন্তু বাদী আমাকে আসামি করে হোয়াটসঅ্যাপে মামলার সব কাগজপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছেন।’

সত্যজিৎ মুখার্জি বলেন, তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও মামলার নথি পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। চাঁদা আদায়ের জন্য বাড্ডার ঘটনায় ফরিদপুরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা।

বাদীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাবিবুর রহমান লাবলু সালথার খলিশাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। বর্তমানে কোনো পদে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতি করেন বলে জানা গেছে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘হাবিবুর রহমান লাবলু স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। আমি তাঁকে চিনি। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করেন। বাড্ডা থানায় তাঁর মামলা করার ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই।’

সিরাজুলের মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দিয়ে শফিকুল বলেন, ঘটনার দিন স্থানীয় লোকজন বাড্ডা থানায় হামলা করেন। পুলিশ গুলি করতে করতে থানা থেকে বের হয়। তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে সিরাজুল মারা যান। সিরাজুলের মুঠোফোন নিয়ে কেউ একজন তার মৃত্যুর খবর দেন। পরদিন ৬ আগস্ট দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুরে নিয়ে আসেন। ওই রাতে তাকে দাফন করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ছেলের মধ্যে সিরাজুল ছোট। সিরাজুল বিবাহিত, তবে তার কোনো সন্তান নেই। ঢাকায় একটি গ্যারেজের মালিক ছিল সে।’

এ মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু বলেন, তিনি নিহত সিরাজুলের খালাতো ভাই। সিরাজুলের মায়ের বোনের কোনো এক আত্মীয়ের সূত্রে তিনি খালাতো ভাই দাবি করে বলেন, সিরাজুলের বাবার অনুমতি নিয়েই মামলা করেছেন। তবে মামলায় ঢাকার বাইরের লোকদের নাম যুক্ত করা সঠিক হয়নি বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাব্বি হত্যা মামলার আসামি শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মডেল তিন্নি হত্যা মামলা: খালাস পেলেন সাবেক সংসদ সদস্য অভি
আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা, দ্রুত আপিল শুনানির আবেদন
ছাত্র হত্যা মামলা: দুজনকে ট্রাইব্যুনালে তোলা হচ্ছে আজ