দীর্ঘদিনেও দখলমুক্ত হয়নি কালীগঞ্জ শহরের ফুটপাত, জনদুর্ভোগ চরমে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের কালিবাড়ি মোড়, থানা রোড, নলডাঙ্গারোড ও হাসপাতাল রোডের দুপাশ দীর্ঘদিন ধরে হকারদের দখলে রয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবৈধভাবে ফুটপাত দখল এবং রাস্তার ওপরে তিন স্তরের দোকান বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন হকাররা। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল ও যান চলাচলে ব্যাপকভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল ও রাস্তার ওপর দোকান বসানোর নেপথ্যের কারিগর ছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, এমন অভিযোগ করেন বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
তারা জানান, কালীগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, সাধারণ জনগণ, উপজেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের পেছনে বারবার ধরনা দিয়েও ফুটপাত এবং রাস্তা দখল মুক্ত করতে পারেননি তারা।
সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। পূর্বে ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে না পারার পেছনে উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষ বরাবরই রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করছেন। ১৪ আগস্ট হঠাৎ করে পৌরসভার প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি দল ফুটপাত দখল করা ব্যবসায়ীদের ফুটপাত এবং রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার মৌখিক নোটিশ দিতে দেখা যায়। এরপর শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।
পরে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করা ব্যবসায়ীদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় একটি নির্দিষ্ট স্থানে তাদেরকে স্থানান্তরিত করলে তারা রাস্তা এবং ফুটপাত ছেড়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সে ঘটনার পর ২৫ দিন পার হলেও পৌর কর্তৃপক্ষকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে রাস্তার ওপর ডাব বিক্রেতা মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্যার পৌর কর্তৃপক্ষকে একটা নির্ধারিত স্থানে আমাদের জায়গা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এরপর পৌরসভা থেকে আর আমাদেরকে কিছু জানায়নি। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের একটা স্থান না দিলে আমরা না খেয়ে মরবো।
কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইলিশায় রিছিলের মুঠোফোনে বাজারের বিভিন্ন সড়কে ফুটপাত এবং রাস্থা দখলমুক্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পূর্বে কি ঘটেছে আমি তা জানি না। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমি এ ব্যাপারে কথা বলব। জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটপাত এবং রাস্তা দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন