ছাত্র আন্দোলনে নিহত

দাফনের ৫৮ দিন পর মিলনের মরদেহ উত্তোলন

রংপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ০৫:৫৮ পিএম


দাফনের ৫৮ দিন পর মিলনের মরদেহ উত্তোলন
ছবি : আরটিভি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলনের মরদেহ দাফনের ৫৮ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে রংপুর মহানগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলা হয়।

মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং নিহতের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত বলেন, আদালতের নির্দেশে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত মুসলিম উদ্দিন মিলনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মুসলিম উদ্দিন মিলন গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর নগরীর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার পরদিন ২০ জুলাই ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করা হয়। মুসলিম উদ্দিন মিলন নগরীর পূর্ব গনেশপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি নগরীর দেওয়ানবাড়ী সড়কের একটি জুয়েলার্সে স্বর্ণশ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ দিকে গত ২৭ আগস্ট নিহতের সহধর্মিণী দিলরুবা আক্তার বাদী হয়ে রংপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রংপুর বিভাগের সাবেক কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, রংপুর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাত হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শফিয়ার রহমান সাফি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এ সময় ৮ থেকে ১৭ নম্বর আসামিদের প্ররোচনা ও উসকানিতে ১ থেকে ৭নং আসামিদের নির্দেশে ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭নং আসামিসহ হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আসামিদের চাপে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।

এ দিকে মামলা দায়েরের ৫ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে সাবেক বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন এবং সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন মামলার বাদী নিহত মুসলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার। সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোফাজ্জল হোসেন বকুল।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission