ঘর থেকে তুলে নিয়ে ২ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা
কক্সবাজারের উখিয়ায় ঘর থেকে তুলে নিয়ে দুজন রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীরা। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উখিয়ার জামতলী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৫) একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আরেকটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ভোরে উখিয়ার কুতুপালং (ক্যাম্প-৪ বর্ধিত) আশ্রয়শিবিরে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন।
নিহতরা হলেন- জামতলী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৫) এ-ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা নেতা নুর বশর (৫৪) ও কুতুপালং (ক্যাম্প-৪ বর্ধিত) আশ্রয়শিবিরের সি-১ ব্লকের বাসিন্দা কবির আহমদ (২৭)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গারা জানান, নিহত নুর বশর কয়েক মাস আগে আরসা ছেড়ে মিয়ানমারের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সঙ্গে যুক্ত হন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করেছে আরসা।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, ঘর থেকে তুলে নিয়ে রোহিঙ্গা নেতা নুর বশরকে হত্যার ঘটনায় আশ্রয়শিবিরে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নুর বশরের একটি গুলি বুকের বাঁ পাশে এবং আরেকটি বাঁ পাশের কোমরে লাগে। ঘটনাস্থলে নুর বশরের মৃত্যু হয়েছে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৩০-৪০ জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গভীর রাতে নুর বশরকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন আরও বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে রোহিঙ্গা সশস্ত্রগোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা কবির আহমদকে রোববার ভোরে হত্যা করেছে। আরসার ১০-১২ জন সন্ত্রাসী কবির আহমদকে ঘর থেকে তুলে আশ্রয়শিবিরের পাশের লালপাহাড়ে নিয়ে যায়। এরপর ছুরিকাঘাত ও গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘আশ্রয়শিবিরে আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালানের টাকা ভাগাভাগি, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ এবং পূর্বশত্রুতার জেরে মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। প্রায় সময় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন