শেরপুরে পুকুরে গোসল করতে নেমে কৃষকের মৃত্যু
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় পুকুরে গোসল করতে নেমে খোকন মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার ভায়াডাঙা মোল্লাপাড়া গ্রামে নিজেদের পুকুরে গোসল করতে নেমে তার মৃত্যু হয়।
খোকনের বড় ভাই ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন লাভলু বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
খোকন ওই গ্রামের মৃত সেকান্দর আলী মেম্বারের ছেলে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
বেলায়েত হোসেন লাভলু জানান, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুবে যান খোকন। পরে আশপাশের লোকজন পুকুর থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার জাহিদ বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যুর কথা শুনেছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরটিভি/এফএ
মন্তব্য করুন
মালিবাগ ফ্লাইওভারে পুলিশের গাড়িতে আগুন
রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাড়িটিতে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, মালিবাগ ফ্লাইওভারের উপরে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়েছি আমরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করেই পুলিশের গাড়ি জ্বলতে দেখেন তারা। গাড়ির বানেট খোলা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পুলিশের গাড়িতে আগুন লেগেছে। আগুন লাগার ফলে গাড়ির ভেতর এবং সামনের অংশ দাউ দাউ করে জ্বলছে।
ডিপজলের মৃত্যুতে শেখ হাসিনার নামে হত্যা মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৬১৪ জনের নামে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলার অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ডিপজল সরদারের নানি শেফালী বেগম।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট চত্বরে কৃষি ব্যাংকের সামনে গুলিতে নিহত হন ডিপজল সরদার। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) হারুনুর রশিদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানা সূত্রে জানা যায়, ৩১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো তিন শতাধিক অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ করা হয়েছে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনিছউজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ ৩১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরো ৩০০ জনকে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সুপারমার্কেট চত্বরে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল।
সে সময় মুন্সীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সাগরের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডিপজলকে গুলি করেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে তার মৃত্যু হয়।
শরীরে বুলেট নিয়ে ৩৯ দিন পর সোহানের মৃত্যু, হয়েছেন আসামি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শোহান শাহ (২৯)। দীর্ঘ ৩৯ দিন বুকে বুলেট নিয়ে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে শ্রীপুর সদরে আলতাফ হোসেন মহিলা কলেজ রোডে শোহানদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়িতে মাতম চলছে। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন শোহানের মা। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন বাবা। শোহানের স্ত্রীর বিলাপ কিছুতেই থামছে না।
শোহানের স্ত্রী শম্পা বেগম বলেন, তাদের বিয়ে হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর। এরপর মধ্যে তিন বছর দুজন একসঙ্গে ঢাকায় সংসার পেতেছিলেন। বাকি সময় স্ত্রীকে গ্রামে পরিবারের সঙ্গে রেখে ঢাকায় চাকরি করেছেন শোহান। আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবার। অর্থসংকটের কারণে ও একা ঢাকায় থাকত। অর্থের কারণে দুজন একসঙ্গেও থাকতে পারিনি। গত এক বছর বাড়িতে একটা নতুন ঘর দিচ্ছিল। সে আমাকে বলেছিল, শম্পা, আমি আর তুমি এই ঘরে থাকব।
মঙ্গলবার ঢাকায় সিএমএইচে শোহান শম্পাকে বলেছিলেন, তুমি কেঁদো না। আমার কিছুই হবে না। তবে শোহান আর ফেরেননি। অস্ত্রোপচার করে শরীর থেকে বুলেট বের করা গেলেও রক্ত বন্ধ করা যায়নি। ১৮ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাঁচানো যায়নি শোহানকে। সংসারে অভাব থাকলেও ভালোবাসার কমতি ছিল না। স্বামী ছাড়া কেউ ছিল না আমার। সে সবসময় সব ধরনের পরিস্থিতিতে আমার পাশে থেকেছে। সে বলত, চিন্তা করো না, আমি তোমার পাশে আছি। আল্লাহ আমাকে একটা সন্তানও দেননি। আমি এখন কীভাবে বাঁচব?
শোহানের বাবা শাহ সেকেন্দার বলেন, আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই স্মার্ট, কর্মঠ আর দায়িত্বশীল। ছোটবেলা থেকেই ইনকাম করে। বিশেষ করে বিয়ের পর একদিনও বসে থাকেনি। চাকরি না থাকলে বাড়িতে এসে রাজমিস্ত্রির কাজও করেছে। আমার পকেটখরচও সে দিত। যেদিন মারা গেল সেদিন সকালেও বিকাশে আমাকে এক হাজার টাকা পাঠিয়ে বলল, এই টাকাটা তুলে চলে আসেন।
ছেলে হারানোর শোকে বিলাপ করতে করতে শোহানের মা সুফিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে আমার মনের কথা বুঝত। কোনো কথা লুকালে ও বুঝে ফেলত। টাকা পাঠিয়ে বলত, মা তুমি আঁচলে গুঁজে রেখো না, যা লাগে কিনে খাও আমি আছি তো। আমার ইনকাম না খেয়ে তোমাদের মরতে দেব না। সুফিয়া বেগম বলেন, এখন এই কথা আমাকে কে বলবে? সবাই আছে শুধু আমার ছেলে নেই।
জানা গেছে, মাগুরার শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে প্রায় ১০ বছর আগে সংসারের হাল ধরতে চাকরিতে যান শোহান। সবশেষ ঢাকার রামপুরা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। তার বাবা শাহ সেকেন্দার এক দশকের বেশি সময় আগে নিজের ব্যবসা গুটিয়ে বেকার হয়ে পড়েন। তার একমাত্র ছোট ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মা-বাবা, স্ত্রী ও স্কুলছাত্র ছোট ভাইয়ের সব খরচের জোগান আসত একজনের বেতন থেকেই। অর্থ সাশ্রয়ের জন্য স্ত্রীকে বাড়িতে মা-বাবার কাছে রেখে ঢাকায় মেসে থেকে চাকরি করছিলেন তিনি। গ্রামের বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণ করা হচ্ছিল। যেখানে স্ত্রীর সঙ্গে সুখের সংসার পাততে চেয়েছিলেন শোহান। তবে তাদের সেই স্বপ্ন আর পূর্ণ হলো না। গত ১৯ জুলাই ঢাকার রামপুরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শোহান। এর ৩৯ দিন পর ২৭ আগস্ট ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শোহানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন বিকেলে শ্রীপুর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই শ্রীপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল খালেক। সেখানে আসামি হিসেবে ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে। মামলার এজাহারে ১৮ নম্বর আসামি হিসেবে নাম রয়েছে শাহ সেকেন্দারের (এজাহারে সেকেন্দার শাহ লেখা হয়েছে) ছেলে শোহানের। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই দিন (২৪ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে শ্রীপুরের আলতাফ হোসেন মহিলা কলেজ মাঠে জড়ো হয়ে ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির করছিলেন আসামিরা।
এ বিষয়ে শাহ সেকেন্দার বলেন, আমার ধারণা, ওর গুলি লেগেছে, এটা জেনেই এলাকার লোকজন ও পুলিশ ষড়যন্ত্র করে মামলায় তাকে আসামি করেছে। আমার ছেলেকে গুলি করা থেকে শুরু করে চিকিৎসায় বাধা দেওয়া, মিথ্যা মামলা দেওয়া সব অপরাধের ন্যায়বিচার চাই আমি।
ভ্যানে লাশের স্তূপের ভাইরাল ভিডিওটি আশুলিয়ার
ভ্যানে লাশের স্তূপের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। লোমহর্ষক এ ভিডিও ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে নিহত কয়েকজন ব্যক্তির। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। পরে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যান জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। তবে, তাদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাতে প্রতিষ্ঠানটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকগুলো মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে একটি ভ্যানে। পাশাপাশি আরেকটি মরদেহ ভ্যানে তুলে দিচ্ছে পুলিশ। পরে একটি পোস্টার দিয়ে লাশগুলো ঢেকে ফেলা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন পুলিশকে আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা যায়। যদিও পুলিশের জ্যাকেট পরে যারা ছিলেন তারা আসলে পুলিশ ছিলেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অনেকের।
রিউমার স্ক্যান জানায়, নিথর দেহের স্তূপের বহুল আলোচিত ভিডিওটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। ৫ আগস্ট বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকেন এমন দুইজন দাবি করেন, ভিডিওর দেয়ালে যার পোস্টার দেখা যায় তিনি আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল হোসেন ভূঁইয়া।
জানা গেছে, দেয়ালের এই পোস্টার এখন আর নেই। ৫ অগাস্টের পরপরই সব দেয়ালে নতুন রং করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে গুলি চালায় পুলিশ।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে গত ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েক শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া যায়। এ অবস্থায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান। এমপি মন্ত্রীদের কেউ বিদেশ পালিয়ে গেছেন, কেউ দেশের আত্মগোপনে রয়েছেন আবার কেউ গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন।
ভ্যানের সেই মরদেহগুলো পুলিশের গাড়িতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়
ভ্যানে মানুষের নিথর দেহ স্তূপ করার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গা শিউরে উঠা ভিডিওটি ছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কয়েকজন ব্যক্তির।
গতকাল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সামনে আসে। প্রথমে ঘটনাস্থল নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও, পরে একটি নির্বাচনী পোস্টারের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের আশুলিয়ায়। ভিডিওতে দেখা যাওয়া হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যদের একজন ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনাটি ৫ আগস্ট বিকেলের।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভ্যানের ওপর তোলা হচ্ছে একের পর এক মরদেহ, একটির ওপর আরেকটি রক্তাক্ত লাশ; মাথায় হেলমেট বুকে ভেস্ট পরিহিত কয়েকজন পুলিশ সদস্য ব্যস্ত এই কাজে। মরদেহগুলো ঢেকে দেওয়া হলো ময়লা চাদর আর রাস্তার পাশের ব্যানারে। চাদর আর ব্যানারের আড়াল থেকে দেখা যাচ্ছে হাত-পা-মাথা...।
পুলিশের এমন নিষ্ঠুর আচরণে হতভাগ হয়েছে দেশবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান বলেন, সেদিন আমরা ভয়ংকর চিত্র দেখলাম। একপাশে আন্দোলনকারীরা অন্যপাশে পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন মারা যান। এরপর ছয়টি মরদেহ একটি ভ্যানে তোলে পুলিশ। কিছু সময় পরই সেসব মরদেহ পুলিশের গাড়িতে দেখা যায়। তখন মরদেহগুলোসহ সেই গাড়িটি আগুনে জ্বলছিল।
জানা গেছে, ভ্যানে মোট মরদেহের সংখ্যা ছিল ছয়টি। যার মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন সজল, তানজিল আহমেদ সুজয়, বাইজিদ ও সবরু হুমায়ুন। বাকি দুজনের পরিচয় এখনো মেলাতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগ আছে, মরদেহগুলো পুলিশের গাড়িতেই পুড়েছে।
আশুলিয়া থানা সংলগ্ন বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে তারা মসজিদে আসেননি। তবে পরদিন সকালে পুড়ে যাওয়া ছয়টি মরদেহের জানাজা পড়ানো হয় সেখানে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আজ সকালে ভিডিওটি দেখেছি। এটি এনালাইসিস করা হচ্ছে। আপনারা যেহেতু মিডিয়ায় কাজ করেন, কোনো তথ্য কিংবা সূত্র পেলে আমাদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি।
স্বামীকে তালাক দিয়ে একই কাজী অফিসে প্রেমিককে বিয়ে
স্বামীকে তালাক দিয়ে একই কাজী অফিসে প্রেমিককে বিয়ে করেন সালমা খাতুন (ছদ্মনাম) নামের এক গৃহবধূ। শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর তানোরের মুন্ডমালায় কাজী অফিসে স্বামীকে উপস্থিতি রেখে আগে তালাক দিয়ে প্রেমিক শাহিন আলমকে বিয়ে করেছেন সালমা খাতুন (২৪)।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাজুল ইসলাম।
সালমা খাতুনের সদ্য তালাকপ্রাপ্ত স্বামী মাসুদ রানা রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াদাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। লাকির বিয়ে করলেন তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের গাল্লা বৈদ্যপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শাহিন আলমকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বিয়ের দাবিতে একই এলাকায় পরকীয়া প্রেমিক শাহিন আলমের বাড়িতে যান সালমা খাতুন। এ সময় সালমাকে মারধর করে মধ্যযুগীয় কায়দায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনে করেন ওই প্রেমিকের পরিবার। পরে মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহাজুল ইসলাম লাকিকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এরপরে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ নিয়ে ঘটনার দিনে ওই নারী মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে ওই নারী প্রায় ১১ বছর প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রেমিক শাহিনকে বিভিন্ন সময় ৩ লাখ টাকা ও ২৫ হাজার টাকা মূল্যের স্মার্ট ফোন দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন সালমা খাতুন।
বিষয়টি নিয়ে শাহিনেরে সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে শনিবার সন্ধ্যায় ওই নারীর মোবাইল ফোনে কল করা হলে তার মা রিসিভ করে বলেন, তার মেয়ে বাড়িতে নেই। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। এখনও বাড়িতে ফেরেনি।
এ বিষয়ে এসআই শাহাজুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর শাহিন নামের এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। মেয়েটার ওপর নির্যাতনের পর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। তাকে সুস্থ হয়ে অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। পরে সালমার ভাইকে ফোন করা হলে বিয়ের বিষয়টি সে নিশ্চিত করে।
তিনি আরও বলেন, শনিবার দুপুরে তানোরের মুন্ডমালায় আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে পরে শাহিনকে বিয়ে করেছেন সালমা খাতুন। এই বিয়েতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধরা হয়েছে।
গ্রিন কার্ড পেয়েছেন স্বামী, ইতালি যাওয়া হলো না তানিয়ার
প্রবাসী স্বামী আসলাম উদ্দিন কুদ্দুস ইতালির গ্রিন কার্ড পেয়েছেন। আট বছরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে প্রবাসী স্বামীর কাছে যাবেন তানিয়া আফরোজ (২৮)। ভিসার কাজে মা তহুরা বেগমকে (৫৫) নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তবে তানিয়ার ইতালি যাওয়া আর হলো না। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে মা-মেয়ের।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ অংশের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি এলাকায় তাদের বহনকারী যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ ছয়জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ১০ জন।
জানা গেছে, নিহত তানিয়া আফরোজ খুলনা শহরের শিপইয়ার্ড স্কুলের সাবেক শিক্ষক আবু হাসানের মেয়ে। তার শ্বশুরবাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। স্বামীর নাম আসলাম উদ্দিন কুদ্দুস। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে। সম্প্রতি দেশটির গ্রিন পাসপোর্ট পেয়েছেন।
এদিন দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহতদের মরদেহ বুঝে নিতে এসে তানিয়া আফরোজের চাচাতো ভাই রেজা বলেন, ‘তানিয়া আমার কাজিন। ওর আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ওর স্বামী ইতালিতে সদ্য গ্রিন কার্ড পেয়েছে। তানিয়া তার স্বামীর কাছে চলে যাবে কিছুদিনের মধ্যে এমন কথা ছিল। সব ঠিকঠাক। আজ ঢাকায় যাচ্ছিল ভিসার কাজে। ওর মেয়েকে বাবার বাসায় রেখে মাকে সঙ্গে করে ঢাকায় যাচ্ছিল। ভোর সাড়ে ৬টায় ইমাদ পরিবহনের একটি গাড়িতে রওয়ানা হয়। সাড়ে ৮টার পর আমরা খবর পাই তাদের গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে। তখনো জানতাম না তানিয়া কিংবা তার মা মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকায় কাজ শেষ করে বিকেলেই ফেরার কথা ছিল তাদের। এখন ফিরবে লাশ হয়ে। আমরা পুলিশের কাছ থেকে লাশ বুঝে নেওয়ার জন্য এসেছি।’
এর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হন।