ইয়াবা দিয়ে বিএনপির নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগ, ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ইয়াবা দিয়ে নোমান মিয়া নামে বিএনপির এক নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক।
বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে আশুগঞ্জ শহরের জহিরুল হক মুন্সী শপিং কমপ্লেক্স এলাকার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুগঞ্জ থানার ওসিসহ দুই উপপরিদর্শককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্তরা হল আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন, থানার উপপরিদর্শক দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান। এবং এই ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রোমান মিয়া বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
লিখিত অভিযোগে জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশুগঞ্জ বাজারের জহিরুল হক মুন্সী মার্কেট এলাকায় নোমান মিয়ার ভাড়া বাসায় যৌথ বাহিনীর একটি দল আসেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুরো বাসায় তল্লাসি চালায়। তল্লাসি করার পর কিছু পায়নি। একপর্যায়ে আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী নোমানের বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় হঠাৎ করে কিছু ইয়াবা টেবলেটের একটি প্যাকেট সোফার কাছে ফেলে দেয়। এবং ঘরে থাকা নগদ ৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ও স্বাক্ষর করা চেক বই নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। পরে তাকে ধরে থানায় নিয়ে আসেন। থানার আনার পর ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তখন পুলিশ সদস্যরা ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে না আশ্বাস দেয়া হয়।
এদিকে, নোমান মিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলায় ৬ নম্বার আসামি তিনি। সেই মামলায় তাকে আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে সকালে মামলার বাদী রমজান মিয়া এসে নোমানের বিষয়ে কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ দুপুরে ১২টার দিকে ছেড়ে দেয় তাকে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী রমজান মিয়া বলেন, নোমান মিয়াকে ভুলক্রমে আসামি করা হয়েছে। এবং নোমানের বিষয়ে আদালতে এফিওফিড করে দেয়া হয়েছে। তাই নোমান মিয়াকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে বলেছি।
রোমান মিয়া বলেন, আমি এই ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, নোমান মিয়া একটি মামলার ৬ নং আসামি। রাতে তাকে আটক করা হলেও সকালে বাদী নোমান মিয়ার নাম ভুলক্রমে এজাহারে লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। বাদী বিষয়টি আদালতেও জানিয়েছেন। বাদীর বক্তব্যের কারণেই রোমান মিয়াকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
তবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওসিসহ তিনজনকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে কেউ অপরাধ করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। কঠোরভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন