মাঠে ফুটবল খেলতে খেলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তরুণ
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ফুটবল খেলার সময় এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে যশরা ইউনিয়নের দৌলতপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফাহিম (১৮) উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের জন্মজয় গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে।
জেএসএস ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মতিউর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জেএসএস ক্লাবের সঙ্গে দৌলতপুরের একটি ফুটবল ম্যাচ ছিল, খেলা চলছিল। ওই খেলায় ফাহিম অতিরিক্ত খেলোয়ার হিসেবে সাইড বেঞ্চে বসেছিল। বিরতির পর ফাহিমকে মাঠে নামানো হয়। মাঠে নামার দুই থেকে তিন মিনিট পর মাঠেই লুটিয়ে পড়ে ফাহিম। পরে ফাহিমকে উদ্ধার করে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরটিভি/এএএ/এআর
মন্তব্য করুন
ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ২ যুবক আটক
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে এক নারী ও তার মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে, গত রোববার রাতে উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের দুর্গম চরে এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন—হাসান (৩৬) ও হারুন (৩২)। তারা ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী চট্টগ্রামে গাড়ি চালান। উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের এক দুর্গম চরে ওই নারী তার এক ডিভোর্সি মেয়েকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তার এক দূর সম্পর্কের দেবর প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাশেদ, সাইফুল, হাসান, হারুন, রাজু ও ইব্রাহিম তাদের মা-মেয়েকে সন্দেহ করতেন। গত রোববার রাত ১১টার দিকে ৬ যুবক ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে ঢোকেন। একপর্যায়ে তারা ঘরের দরজা খুলে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা ওই নারীর দূর সম্পর্কের দেবরকে (২১) বেঁধে তাকে ও তার মেয়েকে (২০) ঘর থেকে বের করে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে আরও বলেন, যুবকদের মধ্যে তিনজন তাকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির পুকুর পাড়ে ও অন্যরা তার মেয়েকে বসত-ঘরের পাশের রান্নাঘরের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে রাত তিনটা পর্যন্ত পালাক্রমে ওই যুবকরা তাদের ধর্ষণ করে। যাওয়ার সময় টাকাপয়সাসহ ঘরের জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুইজনকে আটক করে। নির্যাতিত নারী ও তার মেয়েকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরটিভি/এমকে/এআর
৯ লাখ খরচ করে ‘কৃষি ট্রেনে’ আয় ৩৬০ টাকা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কৃষিপণ্যের দাম কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চাঁদাবাজি এড়িয়ে কম খরচে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষিপণ্য পৌঁছে দিতে চালু করা হয়েছে বিশেষ ট্রেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ছাড়ে এমনই এক ট্রেন। ঢাকায় পৌঁছাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এই ট্রেনের পেছনে ব্যয় হয় প্রায় ৯ লাখ টাকা। অথচ আয় হয়েছে মাত্র ৩৬০ টাকা।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। এ দূরত্বে ট্রেন পরিবহনে খরচ হয় ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩২ টাকা। কিন্তু গতকাল প্রথম দিন রাজশাহী থেকে ট্রেনটিতে গেছে ডিমের ১৫০ কেজি ফাঁকা খাঁচি (ক্যারেট)। যা থেকে রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করেছে ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ এ দিনে লোকসান হয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৭২ টাকা।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, এই ট্রেনে সাধারণ লাগেজ ভ্যানের পাশাপাশি রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মাধ্যমে মাছ, মাংসসহ পচনশীল পণ্য পরিবহন করা যাবে। রহনপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি পণ্যের ভাড়া পড়বে ১ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে কৃষকরা এতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ট্রাক-পিকআপের চেয়ে ট্রেনের ভাড়া কম। কিন্তু ট্রেনে পণ্য পরিবহন করতে কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকামের আলাদা পরিবহন খরচ পড়ে যাচ্ছে কেজিপ্রতি ৩ টাকার বেশি। অথচ সড়কপথে ট্রাকে মাল পরিবহন করতে কেজিপ্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা খরচ পড়ে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পাইকারি কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি ফাইজুল ইসলাম বলেন, ট্রেনে অল্প খরচে সবজি পরিবহন করা গেলে অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো হবে। তবে ট্রেনটি যে চালু হবে, সেটি আমরা জানি না। জানলে হয়তো কিছু মাল পাঠাতে পারতাম।
রেল কর্মকর্তাদের দাবি, যথেষ্ট প্রচার চালালেও ট্রেনে কৃষিপণ্য পরিবহনে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তবে ভবিষ্যতে সাড়া মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ এই ট্রেনটি সপ্তাহের মঙ্গলবার খুলনা থেকে ঢাকা, বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় থেকে ঢাকা এবং শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কয়েক দিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা চালিয়েছি। কৃষি বিপণন ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও প্রচার করেছি। মূলত কৃষকদের সঙ্গে ঢাকার ব্যবসায়ীদের সমন্বয় নেই। পাশাপাশি কয়েক দিন ধরে আবহাওয়া ভালো নেই, তাই হয়তো কৃষক ফসল সংগ্রহ করতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সঙ্গে যদি ঢাকার ব্যবসায়ীদের সমন্বয় করা যায়, তবে এই ট্রেন সাড়া ফেলবে।
আরটিভি/আইএম/এআর
ভিডিওকলে নববধূ ও প্রবাসী প্রেমিকের আত্মহত্যা, অতঃপর...
কুমিল্লায় বিয়ের ১২ দিন পর স্বামীর বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন নববধূ। একই সময় ওই নববধূকে ভিডিওকলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন তার প্রবাসী প্রেমিক।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলার লালমাইয়ে উপজেলার বেতুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রংমিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় সদর দক্ষিণ থানাধীন মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে নিহত গৃহবধূ খাদিজা আক্তার ঊর্মির (১৬)। অন্যদিকে তার প্রেমিক কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে সাফায়েত হোসেন। ঊর্মির বিয়ের ১৩ দিনের মাথায় প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে। ওই সময় তার ওমানপ্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেনও আত্মহত্যা করেন। তাদের দুজনের কাছ থেকেই চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে একসঙ্গে দাফনের আকুতি জানিয়েছেন নববধূ।
ঊর্মির মরদেহের কাছ থেকে পাওয়া চিরকুটে লেখো ছিল, ‘চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি, ও আমার প্রথম সাথি। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউরে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেকো। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা-মা ও ভাই-বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু একসঙ্গে থাকতে দেও নাই, আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। এক দিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পূরণ করেন আপনারা।’
অন্যদিকে প্রবাসী সাফায়াত মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখেছেন, শেষ ইচ্ছে পূরণ করার দায়িত্ব আপনাদের। আমার মৃত্যুর কারণ একমাত্র ওর ফ্যামিলি। আমার মোবাইলে সব রেকর্ড করা আছে। সব কিছু ভিডিও করা আছে। আমার মৃত্যুর জন্য কে কে দায়ী সব কিছু আমার মোবাইলে রেকর্ড করা আছে আর ভিডিও করা আছে। আমার মোবাইল তার প্রমাণ। আমার মোবাইল চেক করলে সব পাবেন। রেকর্ড অপশনে আর গ্যালারিতে সব আছে। গ্যালারিতে আমার আটটা ভিডিও আছে। সবগুলো দেখবেন। লক খুলে রেকর্ড অপশনে ঢুকবেন, ইমোতে দুইটা আর বাকিগুলো গ্যালারিতে পাবেন। তার দেওয়া চিঠি আছে আরিফ নামের আইডিতে। আমাদের মৃত্যুর কারণ তারা। কোনো দিন ক্ষমা করব না।
ঊর্মির মা নুরুন্নাহার জানান, তার মেয়ে ঊর্মির সঙ্গে সাফায়াত নামের একজন প্রবাসী ছেলের সম্পর্ক ছিল। গত ১৪ অক্টোবর সম্মতি নিয়েই মেয়েকে বিয়ে দেন তারা। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল সে। শনিবার রাতে হঠাৎ তার খবর পান ঊর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়াত ভিডিওকলে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। প্রবাসী ছেলেটাই তার মেয়ের মাথা খারাপ করে দিয়েছে।
সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক জানান, গত বছর তিনি ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে তার ছেলে হঠাৎ বিদেশে কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনেছিলেন, ফেসবুকে তার ছেলের সঙ্গে ঊর্মি নামের এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সাফায়াত অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে তার ছেলের সঙ্গে ভিডিওকলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছেন তিনি।
এ বিষয়ে লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, নববধূ প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন। প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার রাতে নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশে এটি লিখেছিল। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
আরটিভি/এসএপি
সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কা, বেঁচে আছেন সেই কিশোর
রংপুরে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত কিশোর লিখন মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখন মারা গেছে বলে যে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তা সঠিক নয়। বর্তমানে লিখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সে এখন অনেকটাই সুস্থ।
আহত লিখন মিয়া রংপুর মহানগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য বিনাটারি গ্রামের মেহেরুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় কেরানীরহাট আল ইখলাস দারুস সুন্নাত দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে চার বন্ধু মারুফ, রনি, মোরসালিন ও আবু সিদ্দিকের সঙ্গে ঘুরতে বের হন লিখন মিয়া। তারা একসঙ্গে পার্শ্ববর্তী সিংগিমারী ব্রিজ এলাকায় যান। সেখানে বন্ধুরা মিলে রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তুলতে প্রস্তুতি নেয়। এ সময় রেললাইনের খুব কাছাকাছি থাকা লিখন মিয়া ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। এর কিছুক্ষণ পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন বিকেলে ৪৬২ ডাউন বুড়িমারী লোকাল ট্রেনটি সিংগিমারী ব্রিজ পার হওয়ার সময় চার-পাঁচজন ছোট ছেলে টিকটক ভিডিও করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেললাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে না দাঁড়ানোর কারণে এমনটি হয়েছে। এটি অসচেতনতার কারণে ঘটলেও অলৌকিকভাবে ছেলেটি বেঁচে গেছে।
লিখনের বাবা মেহেরুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া। এত বড় দুর্ঘটনার পর আল্লাহ্ আমার ছেলেকে নতুন করে জীবন দিয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছেলে এখন সুস্থ আছে। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
লিখনের আহত হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার মা লিলি বেগম বলেন, আমরা তো ঘটনাস্থলে যাইনি। কি হয়েছে সেটাও আমরা জানি না। দুর্ঘটনাস্থল থেকে কাছাকাছি হওয়ায় প্রথমে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রেফার্ড করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দিয়েছে। এখানে ট্রিটমেন্ট চলতেছে। ওর (লিখনের) মাথায় ১৩-১৪টা সেলাই পড়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মৃত্যুর খবরটি গুজব উল্লেখ করে লিখনের বড় ভাই মিথুন বলেন, ফেসবুকে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর দেখে অবাক হয়েছি। এরকম ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠিক নয়। একটা আহত চিকিৎসাধীন মানুষকে নিয়ে এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। আমার ছোট ভাই এখন ভালো আছে। সকল মা-বাবার প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখুন, কোথায় যাচ্ছে, কি করছে এসবের খোঁজ রাখুন। কার,ণ একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন লিখনের বন্ধু মোরসালিন। তিনি বলেন, আমরা সবাই ট্রেন থেকে একটু দূরেই ছিলাম। আমি যখন ভিডিও করি লিখন বুঝতে পারেনি ওর খুব কাছাকাছি ট্রেন চলে এসেছে। আমাদের অসতর্কতার কারণে এমনটি হয়েছে। বর্তমানে লিখনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে এ শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার সময়ের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোরসালিন বলেন, আমরা মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম। বেশ কিছু ছবিও তুলেছি। ট্রেনের সঙ্গে নিজেদের সেলফি তোলার জন্য যখন দাঁড়িয়ে ছিলাম তখন ভুলে চাপ পড়ে ভিডিও রেকর্ড হয়। এ সময় আকস্মিকভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমার এলাকার ভাইয়েরা ফোন থেকে ভিডিওটা নিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাব্বির জানান, ট্রেনের ধাক্কায় আহত সেই ছেলে বেঁচে আছে। তার অবস্থা উন্নতির দিকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মর্মান্তিক সেই ভিডিও অনেকের মনেই দাগ কেটেছিল। আহত লিখন নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছে।
আরটিভি/এফআই
ফেসবুক পরিচয়ে বিয়ে, অতঃপর...
ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম এবং বিয়ে। বিয়ের আগে কথা ছিল একটা ব্যবসা শুরু ও বছরখানেক পরে ব্যবসার ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেবেন। এ কথা বলে তরুণীর প্রবাসী বাবার কাছ থেকে নেন ৫০ লাখ টাকা। আর এই ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার পর থেকে উধাও তিনি। পরে জোরপূর্বক ডিভোর্সও দেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা নাদুরপুকুর এলাকার বাসিন্দা রিমুর সঙ্গে। আর এ ঘটনায় অভিযুক্ত তার স্বামী অ্যাপোলো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানির মালিক মাহবুব সাঈদী।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে রিমু জানান, ২০২১ সালে কোম্পানি খুলে আমাকে ২০ শতাংশ শেয়ার মালিক করার কথা বলে আমার সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাবার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেন। এ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রও সম্পাদন হয় আমাদের মধ্যে। পরের বছর বিয়েও করে সে। কোম্পানি কিছুদিন পরিচালনার পর আমি তার বিভিন্ন অর্থনৈতিক জালিয়াতি ধরে ফেলি এবং এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হলে মাহবুব সাঈদী ২০২২ সালের এপ্রিলে জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমি এবং আমার মাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে জোর করে আমাকে ডিভোর্সও দেয়।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ব্যবসার জন্য দেওয়া টাকা কিংবা লভ্যাংশ ফেরত দেয়নি। অপহরণ এবং দেনমোহর না দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেও গত দুই বছর সে এবং তার সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকির কারণে তিনি ন্যায়বিচার পাননি।
আরটিভি/এএএ/এসএ
জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের পতাকা উত্তোলন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
চট্টগ্রামে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন কাণ্ডে ইসকন নেতাসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকার উত্তর মোহরার মো. ফিরোজ খান (৪৯) কোতোয়ালি থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- ইসকন চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন কুমার ধর প্রকাশ, চিম্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, অজয় দত্ত (৩৪), লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু (৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) ও হৃদয় দাস (২৫)।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ নগরের লালদিঘী মাঠে মহাসমাবেশ আয়োজন করে। সেদিন ইসকন চট্টগ্রাম বিভাগের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর নির্দেশে নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করা হয়েছে। এরপর গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংঘঠিত হওয়ার পর নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে যা অদ্যবধি সেখানে রয়েছে। ওই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার লোকের সমাবেশ ঘটে।
বাদির অভিযোগ, আসামিরা নিউমার্কেট মোড় জিরোপয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে সু-পরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা প্রদর্শনের হীন উদ্দেশ্যে, দেশের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার মানসে এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্বের প্রতীক স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন পূর্বক অবমাননা করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়।
এজাহারে বাদী আরও অভিযোগ করেন, এ ঘটনা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকারের শামিল। আসামিরা তাদের সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে পরস্পর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর তাদের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার তথা রাষ্ট্রদ্রোহ কাজে লিপ্ত হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণি বিদ্বেষের জন্ম হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণি বিদ্বেষ ছড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ও রাষ্ট্রদোহীতার অপরাধ করেছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ এ বিষয়ে বলেন, ‘নগরীর নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভে জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের পতাকা উত্তোলনের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে রাজেশ ও হৃদয় নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আরটিভি/এসএপি/এসএ
আবু সাঈদের ফরেনসিক প্রতিবেদন জোর করে ৬ বার পরিবর্তন করা হয়: চিকিৎসক
রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেছেন, আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঁজরা ছিল। সরকারের মনমতো প্রতিবেদন দিতে ঢাকা থেকেও তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রংপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানের অপসারণ ইস্যুতে চলমান বিক্ষোভের সময় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের ফরেনসিক প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক ডা. রাজিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাকে ঢাকা থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, তুমি সরকারি চাকরি করে কীভাবে সরকারের বিপক্ষে এই রিপোর্ট দিতে পারো। চূড়ান্ত প্রতিবেদন যখন দিতে যাই, তার আগে ছয়বার প্রতিবেদন পরিবর্তন করানো হয়েছিল। সে সময় রংপুর মেডিকেলের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহফুজার রহমান চার্জে ছিলেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতারা ছিলেন। পুলিশ প্রশাসনের লোকও ছিলেন। তাদের সামনেই আমাকে বাধ্য হয়ে প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।
ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেন, ওনারা (ডা. মাহফুজসহ উপস্থিত অন্যরা) চেয়েছিলেন আমি যেন হেড ইনজুরি দিয়ে ইউরেজোনিক শক দেখিয়ে দেই। কিন্তু আমি তাদের চাপের কাছে মাথানত করিনি। আমার রিপোর্টে উল্লেখ ছিল, দ্য ডেড ওয়াজ ডিউ টু অ্যাভোব মেনশন ইনজুরিস হুইচ ওয়াজ এন্টিমন্টেম অ্যান্ড হোমিসাইডাল।
তিনি বলেন, সবাই ভাবছে হেড ইনজুরির (মাথার আঘাত) কারণে আবু সাঈদ মারা গেছে। হেড ইনজুরি হলে সাধারণত ব্রেনে রক্তক্ষরণ থাকে। স্ক্যামবোল ফ্রাকচার থাকে। সাঈদের ক্ষেত্রে এগুলো কোনটাই ছিল না। আমি প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। আমাকে নানাভাবে ভয় দেখানো হয়েছে।
আরটিভি/এমএ