বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে অতিথিদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়
বিয়েতে রক্তের গ্রুপ জানুন, প্রিয়জনদের নিরাপদে রাখুন। এমন স্লোগানে বিয়ের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে বর, কনে, পরিবারের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হলো। শুধু রক্তের গ্রুপ নির্ণয় নয়, তা আবার রেকর্ডভুক্ত করে সযত্নে রাখা হয় ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের জন্য।
এমন ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার ভাঙ্গমোড় ইউনিয়নে বর শরীফ আহমেদ রেইনের বিয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠানে। এখানে প্রায় ১৫০ জন আমন্ত্রিত অতিথি নিজেদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করান।
ফুলবাড়ি উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রামরাম সেন গ্রামের বাসিন্দা সাবেক অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও শাহিদা বেগমের সন্তান ব্যবসায়ী শরীফ আহমেদ রেইন বিয়ে করেন নড়াইলের লোহাগড়া সদর উপজেলার টিপু-সুলতান ও শিল্পী বেগমের কন্যা সুলতানা সাজানকে।
এ বিয়ে উপলক্ষে শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বর শরিফ আহম্মেদের গ্রামের বাড়িতে আয়োজন করা হয় বৌ-ভাতের। এখানে ৫০০ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ অতিথিদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে আপ্যায়ণ প্যান্ডেলের পাশে স্থাপন করা হয় রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের ক্যাম্প। টানানো হয় ব্যানার।
আমন্ত্রিত অতিথিরা নিজেদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরেন। আর এসব অতিথিদের রক্তের গ্রুপসহ নাম ঠিকানা রেকর্ড রাখা হয়।
এ কাজ পরিচালনা করেন ফুলবাড়ি উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংঠন ফুলবাড়ী ব্লাড ব্যাংক ও হেল্প লাইন। এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন অন্তর ইকবাল, রাজ আহমেদ, ঊর্মি আক্তার, রানা মিয়া, শাহনাজ, রোকন, আলামিন। সার্বিক তথ্যাবধায়ন করেন সংগঠনটির উপদেষ্টা অন্তু চৌধুরী।
বর শরিফ আহম্মেদ রেইন জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আগ্রহী অতিথিদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়েছে। যাতে বিবাহ উত্তর বর বা কনে বা পরিবারের কোন প্রকার রক্তের প্রয়োজন হলে দ্রুত রক্ত দাতাকে শনাক্ত করা যায়, তাই এমন উদ্যোগ। এই উদ্যোগ প্রস্তাবটি পাই ফুলবাড়ি উপজেলার ব্লাড ব্যাংক ও হেল্পলাইনের স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে থেকে। বিষয়টি আমার কাছে খুবই ভালো এবং উপযোগী মনে হওয়ায় তাদেরকে আমন্ত্রণ জানাই। তারা আগ্রহিদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছেন। বিষয়টি নতুন মনে হলেও অতিথিরা এটা সাদরে গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছেন।
ফুলবাড়ি ব্লাড ব্যাংক ও হেল্পলাইনের উপদেষ্টা অন্তু চৌধুরী বলেন, আমাদের গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালে অনেক সময় রক্তের প্রয়োজন হয়। সে সময় রক্তদাতাকে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। আর বিয়ে বাড়িতে মূলত বর-কনের আত্মীয়-স্বজনরাই বেশি থাকেন। সেক্ষেত্রে তাদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ডাটা থাকলে পরবর্তিতে নতুন প্রসূতির রক্তের প্রয়োজন হলে তা সহজেই পাওয়া যাবে। এই লক্ষ্যে আমাদের সংগঠন কাজ করছে।
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন