টাঙ্গাইলে দুই কেজি চালের দামে এক কেজি বেগুন!
টাঙ্গাইলের বিভিন্ন হাটবাজারে সব ধরনের শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নআয় ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাজারে দুই কেজি চালের দামে কিনতে হচ্ছে এক কেজি বেগুন। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। গত সাত দিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বেশিরভাগ সবজিই কিনতে হচ্ছে গড়ে ১০০ টাকা কেজিতে। উৎপাদন এলাকা ও রাজধানীর মধ্যে দামে খুব একটা পার্থক্য নেই। এখনও স্বস্তিতে নেই কাঁচাবাজার। যেন সবজির বাজারে আগুন লেগেছে!
বিভিন্ন হাটবাজারে শাক-সবজি, রসুন, পেঁয়াজ, আদা, ডাল, কাঁচামরিচ ও ভোজ্যতেলসহ বাজারদর কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। বিভিন্ন সবজি সহ খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার একদম বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে বিপদে পড়তে হচ্ছে। সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। মানুষ বাজারে এসে সবজির দাম শুনে মাথায় হাত দিচ্ছেন। এ ছাড়া রান্নার অপরিহার্য কাঁচা মরিচ ও মসলার দামও অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী হাটসহ বিভিন্ন ছোট-বড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত সাতদিন ধরে কাঁচা মরিচের দাম আকাশচুম্বী। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ ৭ দিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৯০ থেকে ১০০ টাকা, রসুন ২০০-২২০ টাকা কেজি, আদা ১৫০-১৬০ টাকা কেজি।
শাকসবজির মধ্যে- প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে, পটল ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, ফুলকপি ১৬০ টাকা কেজি, ধনে পাতা ৬০০ টাকা কেজি, মুলা ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, শসা ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ১০-১৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা, ফুলকপি ১২০ টাকা, মুখী ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিছ ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০-১০০ টাকা, মুলার শাক প্রতি আঁটি ২০-২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৫০ টাকা, লেবু ২০-২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০-৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, কাচ কলা প্রতি হালি ১০-১৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ী রফিকুল ও নজরুল বলেন, এবার আমাদের এলাকায় দফায় দফায় বন্যা আর অতি বৃষ্টিপাতের ফলে চরাঞ্চলের সব খেত পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। তাই সবজির আবাদ কম হওয়ায় বাজারে সবজির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তারা আরও বলেন, সামনে কয়েক দিন পরে শীত মৌসুমের নতুন সবজি আসার আগে নিয়ন্ত্রণে আসবে না বাজার।
গোবিন্দাসী হাটে বাজার করতে আসা জাহিদুল ইসলাম, মালেক, জুবায়ের ও সোহাগ বলেন, বর্তমানে যে হারে চাল, ডাল আটা, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন, আলু, বেগুন, পটল ও শাক-সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ একটি মহল সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন পণ্য-দ্রবের দাম বাড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার জানান, আমরা বাজার মনিটরিং করছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন