• ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১
logo

উত্তাল বঙ্গোপসাগর, কুয়াকাটায় পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

কুয়াকাটা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩৬
উত্তাল বঙ্গোপসাগর, কুয়াকাটায় পর্যটকদের উচ্ছ্বাস
ছবি : আরটিভি

পূর্ণিমার প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ধেয়ে আসছে বড় বড় ঢেউ। এই ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালিতে মেতে উঠেছেন পর্যটকরা।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সৈকতে থাকা পর্যটকদের বার বার মাইকিং করে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। সব বাধা উপেক্ষা করে আগত পর্যটকরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকাল থেকেই উত্তাল সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ উপভোগ করছেন ঘুরতে আসা পর্যটকরা। হৈ-হুল্লোড় করছেন সৈকতের বালিয়াড়িতে। তবে অনেকে প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে তীরে রাখা বেঞ্চিতে বসে উল্লাস করছেন। সকাল থেকে উপকূলের আকাশে মেঘ থাকলেও প্রচণ্ড রোদ ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে বঙ্গোপসাগরে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরে এসে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। এতে সৈকতে থাকা দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। গত তিনদিন ধরে সমুদ্র এমন রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় জোয়ারের সময় ঢেউয়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সৈকত এলাকা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সৈকত সুরক্ষা জিও ব্যাগ ও জিও টিউব। জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে খাল বিলসহ তলিয়ে গেছে উপকূলের নিম্নাঞ্চল।

যদিও উত্তাল সমুদ্রে নামতে পর্যটকদের ট্যুরিস্ট পুলিশ বারবার মাইকিং করে নিষেধ করলেও কোনো নিষেধ মানছেন না পর্যটকরা।

জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। নিম্নচাপটি বিদায় নিয়েছে। পূর্ণিমার জোর প্রভাবে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ণিমা শেষ হলে নদনদীর পানি স্বাভাবিক হবে। তবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

ঢাকা থেকে আসা হাসান মাহমুদ বলেন, সরকারি ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটা ঘুরতে এসেছি। তবে যে ঢেউ আশা করিনি, তার চেয়েও বড় বড় ঢেউ দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।

পর্যটক ইশরাত জাহান বলেন, সমুদ্রের সৌন্দর্য তখনই ভালো লাগে যখন বড় বড় ঢেউ কিনারায় আছড়ে পড়ে। আমি ঢেউ দেখে লোভ সামলাতে না পেরে গোসল করতে নেমে গেছি। বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছি।

কলাপাড়া পৌর শহরের বাসিন্দা বিউটি বেগম বলেন, আমাদের ঘর আন্ধারমানিক নদী-সংলগ্ন। গত দুদিন ধরে জোয়ারের সময় ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকছে। ঘরের সামনে পানিতে থই থই করছে। যার কারণে ভাটা হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘরেই থাকতে হচ্ছে। বাইরে নামতে পারছি না। এ ছাড়া পানি যখন বাড়ে তখন আমাদের রান্না-বান্নাও বন্ধ থাকে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ছাতা বেঞ্চ ব্যবসায়ী নুর হোসেন বলেন, গত দুদিন ধরে অনেক পানি বেড়েছে। যার কারণে জোয়ারের সময় আমাদের ছাতা বেঞ্চ সৈকত থেকে সরিয়ে রাখতে হয়েছে। এ সময় আমাদের বেঞ্চ ভাড়া দেওয়া বন্ধ থাকে। এ ছাড়া ডাব বিক্রেতা, আইসক্রিম বিক্রেতা, আচার বিক্রেতাসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জোয়ারের সময় বিক্রি বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক শাকিল আনোয়ার বলেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গোসল করেছি সমুদ্রে। বড় বড় টেউ যা আগে দেখিনি। বেশ আনন্দ করছি। তবে পুলিশ বার বার মাইকিং করায় এবং পানির স্রোত বেশি থাকায় সৈকতের খুব কাছে থেকেই গোসল করছি।

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার জাহান বলেন, সাগরে যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিলো, সেটি বিদায় নিয়েছে। তবে পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে নদনদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্ণিমা শেষ হলে নদনদীর পানির উচ্চতা কমে যাবে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. আনসার উদ্দিন বলেন, পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে সমুদ্র কিছুটা উত্তাল রয়েছে। তাই পর্যটকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। উত্তাল ঢেউ পেয়ে অনেক পর্যটক গোসলে মেতেছেন, সেজন্য আমরা মাইকিং করছি বারবার। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আমাদের টিম টহলে রয়েছে।

আরটিভি/এমকে

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, যখন আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‌‌‘ডানা’
খুলনায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ, আঘাত হানবে যেখানে
ফের লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস