৩২ মামলার আসামি বাবলা ডাকাতকে গুলি করে হত্যা
৩২ মামলার আসামি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সন্ত্রাসী বাবলা গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে একদল দুর্বৃত্ত মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের মল্লিকের চর এলাকায় দোতলা ভবনের বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
নিহত বাবলা ওরফে উজ্জ্বল চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের বাচ্চু খালাসির ছেলে। তিনি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মল্লিকের চর রহিম বাদশার বাড়িতে থেকে দীর্ঘদিন যাবত মতলব উত্তর, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, শরীয়তপুর এলাকার নৌ ডাকাতি তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। এসব অঞ্চলে নৌ ডাকাতিসহ এখানকার বালু মহলগুলো তিনি নিয়ন্ত্রণ করতো বলে জানায় স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানায়, মঙ্গলবার সকালে দুটি স্পিডবোট ও দুটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে হেলমেট পরে ২২ থেকে ২৫ জন লোক বাবলার বাড়ির সামনে এসে নামে। দোতলা ভবনে ঢুকে তারা দুইটি রুম বাইরে থেকে আটকে দেয় যাতে ভেতর থেকে কেউ বের হতে না পারে। বাবলার রুমের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে বাবলাকে গুলি করে হত্যা করে। মনে হয় তারা আগে থেকেই জানতো বাবলা কোন রুমে আছে এবং অন্যরা কোন কোন রুমে। বাবলাকে খুন করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা চার-পাঁচজনকে আটক করে।
এদিকে বাবলাকে হত্যার খবরে তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলেন, চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী মেঘনা নদীতে বাবলা বাহিনীর প্রধান বাবলা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এলাকাবাসী বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় অনেকেই গুলিবিদ্ধসহ তার বাহিনীর হামলার শিকার হতো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম বলেন, মল্লিকের চর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বাবলার সঙ্গে অপর একটি গ্রুপের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। অপর গ্রুপের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় স্থানীয় অপর গ্রুপটি গজারিয়া উপজেলারই মল্লিকের চরের কাছাকাছি অঞ্চলের।
খোঁজখবরে আরও জানা যায়, মতলব উত্তর, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ সদরে কোন বৈধ ইজারাদাররা বালু তুললেও তাকে নিয়মিত চাঁদা দিতো হতো। মুন্সিগঞ্জ সদর, গজারিয়া, মতলব উত্তর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর এলাকার পদ্মা নদীতে তিনি গড়ে তোলেন সশস্ত্র ডাকাত চক্র।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, এই বাবলা একজন চিহ্নিত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় ৩২টির মতো ডাকাতি ও চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। ইমামপুর ইউনিয়নের মল্লিকের চর এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ সেখানে কাজ করছে।
এদিকে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, বাবলার বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানায় বর্তমানে দুটি ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্ট আছে। এ ছাড়াও আমরা খোঁজ করে দেখেছি মুন্সীগঞ্জ, দাউদকান্দিসহ আশপাশের থানায় তার বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নানা সময় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। তিনি গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য মুন্সীগঞ্জ মল্লিকের চর জনৈক রহিম বাদশার বাড়িতে থাকতেন। সেখানেই আজকে গুলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং তিনি মারা যান।
আরটিভি/এএএ/এসএ
মন্তব্য করুন