• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

নুসরাত হত্যা

পিবিআইয়ের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ফেনী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৮
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান ও সাবেক ডিআইজি বনজ কুমারসহ ফেনীর পিবিআইয়ের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইমরান হোসেন মামুনের মা নুর নাহার বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা লোকমানের আদালতে মামলার আবেদন করেন।

মামলার আবেদনে অভিযুক্তরা হচ্ছেন, পিবিআই সাবেক ডিআইজি বনজ কুমার, পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, ওসি শাহ আলম, পিবিআই উপপরিদর্শক সন্তোষ চাকমা, রতেপ চন্দ্র দাস ও লুৎফর রহমান।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তের স্বচ্ছতা ও রায়ের বিষয়ে শুরু থেকেই এক ধরনের সমালোচনা চলে আসছিল। ওই মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন পিবিআইয়ে কর্মরত পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলম বাবলু। তিনি গত ১২ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ওই মামলার তদন্ত চলাকালে নিয়মবহির্ভূতভাবে আসামিদের নির্যাতন ও তাদের পরিবার থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি ছড়িয়ে দেন। এর আগেও আসামি পক্ষ থেকে বহুবার পিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগ ওঠে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদি ইমরান হোসেন মামুনের মা নুর নাহার বাদী হয়ে ফেনীর আদালতে পিবিআই প্রধানসহ ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় ও আসামির স্বজনদের থেকে অন্তত ৭৭ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলে মামলার আবেদন করেন। বিচারক বাদীর মামলাটি গ্রহণ করে বাদীর জবানবন্দী রেকর্ড করেন। তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি।

এদিকে রাফি হত্যা মামলার আসামির স্বজনরা একই অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে মামলাটির পুনঃতদন্ত চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেন।

ফেনীর মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ছাত্রী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ তাকে নিজের অফিসে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে। পরে রাফি বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর ৬ এপ্রিল রাফির মা বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পরে আদালত তার জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠায়।

এরপর থেকে রাফি ও তার পরিবারকে মামলা প্রত্যাহার করার চাপ দিতে থাকে অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা। যার ধারাবাহিকতায় রাফি পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে তাকে মিথ্যা কথা বলে একটি ভবনের ছাদে নেওয়া হয়। সেখানে বোরকা পরা পাঁচ ব্যক্তি প্রথমে মামলা তোলার জন্য একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলে।

রাফি অস্বীকৃতি জানালে ওই পাঁচ হত্যাকারী প্রথমে রাফিকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। হত্যাকারীদের তিনজন পুরুষ এবং দুইজন নারী। অগ্নিদগ্ধ রাফি ছাদ থেকে নিচে পালিয়ে আসে। তবে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায় বলে চিকিৎসকেরা জানান। ফেনী হাসপাতালে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ১০ এপ্রিল রাতে চিকিৎসাধীন রাফি মারা যায়।

পরে অগ্নিসন্ত্রাসের ওই ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর নুসরাত হত্যা মামলার রায় দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে হত্যার দায়ে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

আরটিভি/এফআই/এআর

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় ফেনীতে গ্রেপ্তার ৩
মোহিনীর সঙ্গে এ আর রহমানের পরকীয়ার গুঞ্জন, যা জানালেন আইনজীবী
মুদি দোকানি রইস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন
গণহত্যা মামলায় মামুন-জিয়াউলসহ গ্রেপ্তার দেখানো হলো ৮ কর্মকর্তাকে